গঠনতন্ত্র

ভূমিকা

نَحْمَدُهٗ وَنُصَلِّى عَلٰى رَسُوْلِهِ الْكَرِيْمِ أَمَّا بَعْدُ فَأَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ كُلُّ نُفْسٍ ذَآئِقَةُ الْمَوْتِ

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কালামে ঘোষণা করেন, প্রত্যেককেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। -(সূরা আলে ইমরান : আয়াত-১৮৫)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে-

وَلَا تَمُوْتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُمْ مُّسْلِمُوْنَ

‘আর তোমরা কেউ খাঁটি মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না’। (সূরা আলে-ইমরান : আয়াত-১০২) আমাদের প্রত্যেকের সামনে মউত, কবর, হাশর, মিজান ও পুলসিরাত- এই পাঁচটি মামলা দায়ের আছে। খাঁটি মুসলমান হয়ে বিদায় নিতে না পারলে উক্ত পাঁচ মামলায় আটকা পড়ে যেতে হবে। দুনিয়ার মামলায় হেরে গেলে পুনরায় আপিলের সুযোগ আছে, কিন্তু আখেরাতের মামলায় একবার হারলে দ্বিতীয়বার আপিলের আর কোনো সুযোগ থাকবে না। এই নশ্বর দুনিয়ায় খাঁটি মুসলমান হয়ে চলার জন্য এক জীবনব্যবস্থার কথা পবিত্র কুরআন শরীফে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেছেন-

إِنَّ الدِّيْنَ عِنْدَ اللهِ الْإِسْلَامُ

‘নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম’। (সূরা আলে-ইমরান : আয়াত-১৯) কেবলমাত্র ইসলামই মানবজাতিকে সিরাতে মুস্তাকিম তথা সঠিক সত্য পথে পরিচালিত করতে পারে। উপরোক্ত পাঁচটি মামলা বা ঘাঁটি পার করে বান্দাকে তার মঞ্জিলে মাক্ছুদ জান্নাতেও একমাত্র ইসলামই পৌঁছাতে পারে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন দয়া করে তাঁর মনোনীত দ্বীন ইসলামকে এই দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত করতে অগণিত নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন। হযরত আদম আ. থেকে নিয়ে আখেরী নবী হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত সকল পয়গম্বরগণই এই দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে গেছেন। ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে সর্বস্তরে পূর্ণ দ্বীন কায়েম করার জন্য তাঁরা আজীবন চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।
হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পর খোলাফায়ে রাশেদীন, সকল সাহাবায়ে কেরাম, হক্কানী পীর মাশায়েখ ও ওলামায়ে কেরাম সবাই ধারাবাহিকভাবে এই দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করতে আজীবন কোশেশ করে গেছেন। কেননা আল্লাহ তা‘আলা ঘোষণা করেছেন-

كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ

‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত। মানব জাতির কল্যাণের জন্য তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের আদেশ দিবে এবং অসৎ কাজে নিষেধ করবে’। -(সূরা আলে-ইমরান : আয়াত-১১০)

আল্লাহ তা‘আলার আদেশ নিষেধের যাবতীয় হুকুম পালন করাই বান্দার কাজ। বান্দা হিসেবে এই নশ্বর দুনিয়ায় প্রতিটি মুহুর্তে আল্লাহর পূর্ণ গোলামী করাই বান্দার দায়িত্ব ও কর্তব্য। এই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে আল্লাহ তা‘আলার মহব্বত ও রেজামন্দী হাসিল করতে হলে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মহব্বত করতে হবে। তাঁর আদর্শ মোতাবেক জীবন চালাতে হবে। এটাই আল্লাহকে পাওয়ার ও তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন করার একমাত্র উপায়।

হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল। তিনি নবী ও রাসূলকুলের শিরোমণি। খাতামুন নাবিয়্যিন। তাঁর পরে কিয়ামত পর্যন্ত দ্বিতীয় আর কোনো নবী বা রাসূল আসবেন না। তাঁর আদর্শ ও সুন্নাত কিয়ামত পর্যন্ত জারী থাকবে। তাঁর অবর্তমানে তাঁর আদর্শ ও সুন্নাতের ধারক-বাহক হবেন তাঁর উত্তরসূরী হক্কানী ওলামায়ে কেরাম ও পীর মাশায়েখগণ। আল্লাহর হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,

إِنَّ الْعُلَمَآءَ وَرَثَةُ الْأَنْبِيَاءِ

‘হক্কানী আলেমগণই নবীগণের যোগ্য উত্তরসূরী’। (সুনানে আবু দাউদ : হাদীস-৩৬৪১)
দ্বীনভোলা ও জান্নাতের পথহারা আল্লাহর বান্দাগণকে সঠিক পথের নির্দেশ প্রদানের জন্য যুগে যুগে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উত্তরসূরী হক্কানী ওলামায়ে কেরাম ও পীর মাশায়েখগণের দ্বারা দ্বীনের দাওয়াতের কাজ চালিয়ে নিবেন। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অবর্তমানে তার উত্তরসূরী হক্কানী ওলামায়ে কেরাম ও পীর মাশায়েখগণের অনুকরণ, অনুসরণ ও তাঁদের নির্দেশিত পথে চলা প্রত্যেকটি মুসলমানের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য।

মুসলিমসমাজকে ধ্বংসের পথ এবং অনৈসলামিক কার্যকলাপ থেকে আল্লাহর নির্দেশিত সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে আমাদের এই ভারত উপমহাদেশের শীর্ষস্থানীয় হক্কানী উলামায়ে কেরাম ও বুযুর্গানেদ্বীন বহু কোশেশ করে গেছেন এবং বর্তমানেও করে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে হক্কানী পীর মাশায়েখদের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি এবং তাদের কর্মপন্থাও অধিক কার্যকর। তাযকিয়াহ ও পীর-মুরিদির মাধ্যমে শিক্ষিত-অশিক্ষিত, আলেম-আওয়াম সর্বস্তরের মানুষকে দ্বীনের উপর উঠাতে তাঁরা অবিরাম মেহনত চালিয়ে গেছেন। তাঁদের মধ্যে সাইয়্যেদুত ত্বয়েফা হাজী এমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ., কুতুবুল আলম রশীদ আহমাদ গঙ্গুহী রহ. এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলাধীন উজানীর ক্বারী ইব্রাহীম রহ. সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। বর্তমানেও এই ধারা অব্যাহত আছে।

ক্বারী ইব্রাহীম সাহেবের অন্যতম রুহানী সন্তান ছিলেন বরিশাল জেলাধীন চরমোনাই-এর হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ ইছহাক রহ.। তিনি তাঁর নিকট থেকে চিশতিয়া সাবেরিয়া তরীকার খেলাফত ও নির্দেশ প্রাপ্ত হয়ে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে দ্বীন ও তরীকার দাওয়াত পৌঁছে দিতে অবিরাম চেষ্টা করে গেছেন। যে এলাকায়ই তিনি সফর করেছেন সেখানেই মসজিদ ভিত্তিক একটি তা’লীম ও হালকায়ে যিকির কমিটি গঠন করে এসেছেন। যে হালকা কমিটিগুলোই পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে মুজাহিদ কমিটি নামে একটি অরাজনৈতিক দ্বীনি সংগঠনে পরিণত হয়।

তিনি আমরণ দ্বীন ও তরীকার দাওয়াত নিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে বেড়িয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা তার মাধ্যমে দ্বীনের বিরাট খেদমত নিয়েছেন। আজীবন দ্বীন ও তরীকার খেদমত আঞ্জাম দিয়ে, হাজার হাজার মসজিদে তালীম ও হালকা কমিটি গঠন করে অবশেষে ১৯৭৩ সালে রফিকে আ’লার ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি পরপারে পাড়ি জমান। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন।

হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ ইছহাক রহ.-এর ইন্তেকালের পরে তাঁরই খলীফা ও সাহেবজাদা হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ ফজলুল করীম রহ. দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। তিনি এই মুজাহিদ কমিটিগুলো সু-সংগঠিত করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। যাতে করে সুষ্ঠু পরিচালনার মাধ্যমে এগুলোর প্রচার-প্রসার ঘটিয়ে দেশের প্রতিটি মহল্লা-মসজিদ এমনকি দেশের বাইরেও তা’লীম-তারবিয়াত ও হালকায়ে যিকিরের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়। পথহারা আল্লাহর বান্দাগণকে আল্লাহর সাথে মিলিয়ে দেয়া যায়। সে লক্ষ্যে ১৯৮২ সালের ২৬ শে ফেব্রুয়ারী চরমোনাই-এর বার্ষিক মাহফিলে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন গঠন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেখানে মরহুম এছহাক রহ. কর্তৃক প্রণীত ‘জেহাদে ইসলাম’ কিতাবে উল্লিখিত মুজাহিদ কমিটি গঠনের মূলনীতি অনুসরণে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির জন্য একটি গঠনতন্ত্র প্রণয়ণের লক্ষ্যে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটি কর্তৃক প্রণীত খসড়া গঠনতন্ত্র ১৩ জুমাদাল উলা ১৪০৩ হিজরী মোতাবেক ১৪ ফাল্গুন ১৩৮৯ বাংলা ও ২৭ ফেব্রুয়ারী ১৯৮৩ ঈসায়ী তারিখে অনুষ্ঠিত চরমোনাই-এর বার্ষিক মাহফিলে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় গঠনতন্ত্রের কিছু পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়ায় ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ঈসায়ী তারিখে বামুকের মজলিসে খাছের সভায় সংশোধিত গঠনতন্ত্রের অনুমোদন সাপেক্ষে ৭ম সংস্করণ প্রকাশ করা হলো।

ধারা-২ পতাকা ও লোগো:
১. পতাকা: বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির পতাকা হবে আয়তাকার সবুজ কাপড়ের মাঝখানে সাদা রং-এ কালিমায়ে তৈয়্যেবা খচিত।
২. লোগো: বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির লোগো হবে কালো লাল ও সবুজ রেখা বেষ্টিত সাদা মেহরাব, তার মধ্যে কুরআন মাজীদের উন্মুক্ত রেখাচিত্রের উপর সবুজ রঙে কালিমায়ে তৈয়্যেবা, কুরআন মাজীদের নিচে ডিম্বাকৃতির বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সংক্ষিপ্ত নাম বামুক

 

প্রথম পরিচ্ছেদ
বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি
গঠনতন্ত্রের মূল বিষয়
ধারা-১ নাম:
এই খালেছ দ্বীনি অরাজনৈতিক সংগঠনের নাম হবে ‘বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি’।
ধারা-২ পতাকা:
বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির পতাকা হবে আয়তাকার সবুজ কাপড়ের মাঝখানে সাদা রং-এ কালিমায়ে তৈয়্যেবা খচিত।
ধারা-৩ সদর দপ্তর:
বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সদর দপ্তর থাকবে চরমোনাই, বরিশাল। কার্যকরী সদর দপ্তর থাকবে ঢাকায়।
ধারা-৪ কার্যকাল:
১. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির মজলিসে খাছের কার্যকাল আমীরুল মুজাহিদীনের সিদ্ধান্তের উপর ন্যস্ত থাকবে।
২. শাখা কমিটিসমূহের কার্যকাল হবে ২ (দুই) বছর।

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ
উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য
ধারা-৫ উদ্দেশ্য:
প্রত্যেক মুজাহিদকে ইসলাহে নফসের মাধ্যমে খাঁটি মুসলমান হিসেবে গড়ে তোলা এবং মোজাহাদার মাধ্যমে আল্লাহর জমিনে সর্ব পর্যায়ে আল্লাহর পূর্ণ দ্বীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জান-মাল কোরবানী করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে উদ্বুদ্ধ করা।

ধারা-৬ লক্ষ্য:
প্রয়োজনীয় দ্বীনি শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে ঈমানী মজবুতি অর্জন করে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের চরম শত্রু নফ্স এবং শয়তানের বিরুদ্ধে সার্বক্ষণিক জিহাদে রত থেকে আল্লাহর পূর্ণ রেজামন্দি সহকারে দুনিয়া ও আখেরাতের কামিয়াবী হাছিল করা।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ
কর্মসূচি

ধারা-৭ কর্মসূচি:
১. চরমোনাই-এর পীর সাহেব হুযূরের মুরীদ, মুহিব্বীন, আশেকীনসহ সকল মুসলমানদের মধ্যে ঘনিষ্ট সম্পর্ক ও আন্তরিক মহব্বত গড়ে তোলা।
২. খেদমতে খালক ও সমাজ কল্যাণমূলক সকল কাজকর্মে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা। ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি যেমন- যিকির-আযকার, ওয়াজ-মাহফিল ও তা’লীম-তারবিয়াতের ব্যবস্থা করে সমাজ হতে সব ধরণের কুসংস্কার ও অনৈসলামিক কার্যকলাপের মূল উৎপাটন করার চেষ্টা করা।
৩. মুজাহিদ সদস্যগণের আত্মিক, নৈতিক ও সামাজিক উন্নতির জন্য ফজর ও মাগরিব বাদ নিয়মিত যিকির, সাপ্তাহিক তা’লীম ও হালকায়ে যিকির, আল্লাহর অলীদের লিখিত কিতাবাদি পাঠ করা। বিশেষ করে চরমোনাই-এর মরহুম পীর আলহাজ হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ এছহাক রহ. লিখিত ২৭ খানা কিতাব, বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি কর্তৃক প্রকাশিত মাওয়ায়েযে কারীমিয়াসহ অন্যান্য কিতাবাদি নিয়মিত পাঠ করা। মাসিক ইজতিমা ও শবগুজারী এবং বছরে দুইবার অগ্রহায়ণ ও ফাল্গুন মাসে চরমোনাই-এর মাহফিলে হাজির থাকার অভ্যাস গড়ে তোলা।
৪. ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত ও মুস্তাহাবের উপর আমল করা। হারাম, মাকরূহে তাহরীমী, মাকরূহে তানজীহী এমনকি সন্দেহযুক্ত জিনিস থেকে পরহেজ করা। নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত, খাছ পর্দার পাবন্দী ও হালাল রুজি নিশ্চিত করা। সুন্নতী জামা, টুপি, পাগড়ী, মেসওয়াক, ঢিলা-কুলুখ ইত্যাদি ব্যবহার ও দাড়ি রাখায় উৎসাহিত করা।
৫. ক. প্রতিটি মসজিদ ও মহল্লা ভিত্তিক মক্তব, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদেরকে দ্বীনি ইলম শিক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করা।
খ. পাঠাগার স্থাপন, মহল্লা ভিত্তিক তা’লীম তারবিয়াত ও হালকায়ে যিকির-এর ব্যবস্থা করে বয়স্ক লোকদেরকে যাহের ও বাতেনে পূর্ণ মুসলমান হিসেবে গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা।
৬. সালিশের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে সব ধরণের ঝগড়া-বিবাদ, মামলা-মোকদ্দমা ইত্যাদি মীমাংসা করে দেয়া। যদি স্থানীয়ভাবে সম্ভব না হয় তবে সাংগঠনিক নিয়মে, পর্যায়ক্রমে উপরস্থ কমিটির মাধ্যমে মীমাংসা করার চেষ্টা করতে হবে। কোনো মতেই অসাংগঠনিকভাবে সরাসরি আমীরুল মুজাহিদীন হযরত পীর সাহেব হুযূরের কাছে কোনো অভিযোগ উত্থাপন করা যাবে না।
৭. দুঃস্থ মানবতার সেবায় কল্যাণ তহবিল গঠন করা ও স্বেচ্ছাসেবক টিম গড়ে তোলা।
৮. কল্যাণ তহবিল থেকে গরীব, দুঃস্থ ও এতিমদের মাঝে খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ, বাসস্থান নির্মাণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা কবলিত অসুস্থ ও অসহায় ব্যক্তিদের সেবা শুশ্রুষার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা ও সাহায্য প্রদানের ব্যবস্থা করা।
৯. সওয়াবের নিয়তে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বৃক্ষরোপন করা, পরিবেশ দুষণমুক্ত করা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নকল্পে স্থানীয়ভাবে রাস্তাঘাট, সাঁকো-পুল ইত্যাদি নির্মাণ ও মেরামত করা।
১০. কমিটির দায়িত্ব পালনের সময় কোনো দায়িত্বশীল বা সদস্য ক্ষতিগ্রস্থ হলে তাদেরকে সাহায্য করা।
১১. চরমোনাই আহ্ছানাবাদ জামিয়া রশীদিয়া ইসলামিয়াসহ যেকোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নতিকল্পে তৌফিক অনুযায়ী সর্বপ্রকার সাহায্য প্রদান করা।
১২. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি কিংবা তার যেকোনো শাখা দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ও শরীয়ত সম্মতভাবে পরিচালিত যেকোনো এতিমখানা, মক্তব, মাদ্রাসা ও দাতব্য চিকিৎসালয়ে সর্বপ্রকার সাহায্য প্রদান করা।
১৩. কোনো মুসলমানের মৃত্যু হলে তাঁর গোসল, কাফন-দাফন ইত্যাদির ব্যবস্থা করা। মৃত মুজাহিদের মৃত্যুর খবর অনতিবিলম্বে চরমোনাই মাদ্রাসায় পৌঁছিয়ে দেয়া যাতে মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকবৃন্দ মরহুমের জন্য দোয়া করতে পারেন। এছাড়াও চরমোনাই-এর বার্ষিক দুই মাহফিলের সময় মৃত মুজাহিদগণের নাম তালিকাভুক্ত করা, যাতে মাহফিলে উপস্থিত সবাইকে নিয়ে হযরত পীর সাহেব হুযূর মরহুমদের রূহের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করতে পারেন।
১৪. নিরক্ষরতা দূরীকরণের লক্ষ্যে প্রাথমিক ও বয়স্ক শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
১৫. গরীব ও অসহায় ব্যক্তিদের বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল নির্মাণ ও এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা।
১৬. মুসলমানদের ছেলে-মেয়েদেরকে বিভিন্ন এনজিওদের প্রতিষ্ঠিত স্কুলে পাঠিয়ে বিজাতীয় এবং নাস্তিক্যবাদী শিক্ষায় শিক্ষিত না করে সহীহ শুদ্ধভাবে কুরআন শরীফ তেলাওয়াত ও দ্বীনি ইলম শিক্ষা দেয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি কর্তৃক পরিচালিত বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন কেরাতুল কুরআন মাদ্রাসা ও বহুমুখী প্রকল্প প্রতিষ্ঠা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
১৭. চরমোনাই-এর হযরত পীর সাহেব হুযূরের বয়ান, বিবৃতি, তরীকা ও মুজাহিদ কমিটির আদর্শ এবং নীতি সম্বলিত সকল বিষয়াদি, মাসয়ালা-মাসায়েল ও দ্বীনি কিতাবাদি মুদ্রণসহ প্রচার ও প্রকাশনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
১৮. সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ তথা শরীয়ত বিরোধী সব ধরণের কাজকর্ম কিভাবে পরিবর্তন করা যায় তার পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের চেষ্টা করা।
১৯. শরীয়তের দৃষ্টিতে সুদ হারাম। এই হারাম কাজ থেকে প্রত্যেকটি মুসলমানকে মুক্তি দেয়ার লক্ষ্যে শরীয়ত সম্মতভাবে সুদ বিহীন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
২০. প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তা’লীম ও হালকায়ে যিকির পরিচালনার জন্য যোগ্য ইমাম তৈরি করা।
২১. অন্ধ ছেলে-মেয়েদেরকে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এবং আনুষঙ্গিক শিক্ষা উপকরণ সংগ্রহ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
২২. গরীব ও বেকারদের কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে হাঁস-মুরগী ও পশুপালন, মৎস চাষ, সেলাই মেশিন, রিক্সা, বেবী টেক্সী ক্রয় এবং কুটির শিল্প স্থাপনের লক্ষ্যে সুদ মুক্ত ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করা।
২৩. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির আওতাধীন বিভিন্ন পর্যায়ের শাখা কমিটি ও তাদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ও শরীয়ত সম্মতভাবে পরিচালিত মাদ্রাসাসমূহের সকল কার্যক্রম ও আয়-ব্যয় হিসাব প্রতি বছর নিরীক্ষা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

চতুর্থ পরিচ্ছেদ
গঠনতন্ত্র
ধারা-৮ আমীরুল মুজাহিদীন:
১. আমীরুল মুজাহিদীন: বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির প্রধানের উপাধি হবে আমীরুল মুজাহিদীন। আমীরুল মুজাহিদীন হবেন চরমোনাই-এর পীর সাহেব (হাফিজাহুল্লাহ)।
২. আমীরুল মুজাহিদীনের কার্যকাল: আমীরুল মুজাহিদীন প্রকাশ্যে শরীয়তের বরখেলাপ কোনো কাজ না করা পর্যন্ত তিনি আমীরুল মুজাহিদীন হিসেবে বহাল থাকবেন।
ধারা-৯ মুজাহিদ সদস্য:
চরমোনাই-এর পীর সাহেব হুযূরের সকল মুরীদান ও মুহিব্বীনগণ বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সদস্য হওয়ার যোগ্য হবেন। তাদেরকে অবশ্যই মুজাহিদ শুমারি সদস্য ফরম পূরণ করতে হবে।

পঞ্চম পরিচ্ছেদ
সংগঠন ও সভা
ধারা-১০ সংগঠন:
সাংগঠনিকভাবে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি দুই ভাগে বিভক্ত থাকবে। যথা: (১) কেন্দ্রীয় সংগঠন ও (২) শাখা সংগঠন।
ধারা-১১ কেন্দ্রীয় সংগঠন:
বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠন মজলিসে খাছ ও মজলিসে আমের সমন্বয়ে গঠিত হবে।
১. মজলিসে খাছ:
ক. মজলিসে খাছ বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির কার্যকরী সর্বোচ্চ পরিষদ।
খ. এই পরিষদ কমিটির সকল কার্যক্রমের পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
গ. মজলিসে খাছের সদস্য সংখ্যা হবে সর্বোচ্চ ৫৭ ও সর্বনিম্ন ৩৫ জন। যাদেরকে আমীরুল মুজাহিদীন হযরত পীর সাহেব হুযূর মনোনীত করবেন। ৫৭-৩৫ সদস্য বিশিষ্ট মজলিসে খাছের বিবরণ নিম্নরূপ :
১. আমীরুল মুজাহিদীন ১জন।
২. নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীন ৪ জন।
৩. সেক্রেটারী জেনারেল ১ জন।
৪. জয়েন্ট সেক্রেটারী ১ জন।
৫. এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী ১ জন।
৬. ইমাম-কাম-অডিটর ১ জন।
৭. সহকারী ইমাম-কাম-অডিটর ১ জন।
৮. সাংগঠনিক সম্পাদক ১ জন।
৯. সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক ১ জন।
১০. প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ১ জন।
১১. সহকারী প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ১ জন।
১২. দপ্তর সম্পাদক ১ জন।
১৩. সহকারী দপ্তর সম্পাদক ১ জন।
১৪. কোষাধ্যক্ষ ১ জন।
১৫. কমান্ডার-১ ১ জন।
১৬. কমান্ডার-২ ১ জন।
১৭. সদস্য ৩৮-১৬ জন।
মোট = ৫৭-৩৫ জন।

২. মজলিসে আম:
ক. মজলিসে আম বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠনের সাধারণ পরিষদ। মজলিসে আমের সদস্য সংখ্যা হবে ৩১৩ জন।
খ. মজলিসে খাছের সদস্যগণ পদাধিকার বলে মজলিসে আমের সদস্য হবেন।
গ. প্রত্যেক বিভাগ ও জিলা শাখা মুজাহিদ কমিটির ছদর, সাধারণ সম্পাদক ও ইমাম-কাম-অডিটরগণ মজলিসে আমের সদস্য হিসেবে গণ্য হবেন।
ঘ. বাকী সদস্যগণ মজলিসে খাছের পরামর্শক্রমে আমীরুল মুজাহিদীন কর্তৃক মনোনীত হবেন।

৩. সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কমিটি:
ক. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির মজলিসে খাছের সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তাবলী বাস্তবায়নের জন্য একটি ‘সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কমিটি’ থাকবে।
খ. সেক্রেটারী জেনারেল মজলিসে খাছের মধ্য হতে জয়েন্ট সেক্রেটারী থেকে কমান্ডার-২ পর্যন্ত দায়িত্বশীলদেরকে নিয়ে ‘সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কমিটি’ গঠন করবেন।
গ. আমীরুল মুজাহিদীনের সিদ্ধান্তক্রমে সেক্রেটারী জেনারেল এ সকল দায়িত্বশীল মনোনীত করবেন।
ঘ. সেক্রেটারী জেনারেল ‘সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কমিটি’র প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
ঙ. ‘সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কমিটি’ প্রতি ২ (দুই) বছর পর অগ্রহায়ণের মাহফিলের সময় মজলিসে খাছের মিটিংয়ে ২ বছরের কর্ম পরিকল্পনা পেশ করে অনুমোদন নিবেন।
চ. প্রতি বছর অগ্রহায়ণের মাহফিলে অনুষ্ঠিত মজলিসে খাছের সভায় দ্বি-বার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন প্রতিবেদন পেশ করবেন।
ছ. অনুমোদিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ‘সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কমিটি’ প্রতি মাসে ঢাকাস্থ কার্যালয়ে মিটিং করবেন।
জ. ‘সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কমিটি’ তাদের সকল কাজের জন্য মজলিসে খাছ ও মুহ্তারাম আমীরুল মুজাহিদীনের নিকট জবাবদিহী করতে বাধ্য থাকবেন।
ঝ. ‘সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কমিটি’র সদস্যের যোগ্যতা মজলিসে খাছের সদস্যদের অনুরূপ।

ধারা-১২ আমীরুল মুজাহিদীনের ক্ষমতা ও অধিকার।
১. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সকল ক্ষমতা ও অধিকার আমীরুল মুজাহিদীনের উপর ন্যস্ত থাকবে।
২. তিনি খাছ ও আম উভয় মজলিসেরই প্রধান হবেন।
৩. তিনি মজলিসে খাছের সদস্যগণের সাথে পরামর্শ করে তাঁদের মধ্য হতে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল মনোনীত করবেন।
৪. তিনি যেকোনো শরয়ী কারণে যেকোনো মুহূর্তে মজলিসে খাছ ভেঙে দিতে পারবেন।
৫. তাঁর পূর্ব অনুমোদন ব্যতীত বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি জাতীয় কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা কার্যক্রম আরম্ভ করতে পারবে না।
৬. তিনি মজলিসে খাছের সদস্যগণের সঙ্গে পরামর্শক্রমে যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন।
৭. মজলিসে খাছের সভায় গৃহীত শুধুমাত্র দ্বীনি ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্তের ব্যাপারে প্রয়োজনবোধে তিনি মজলিসে আমের পরামর্শ নিবেন।
৮. তিনি যেকোনো সময়ে যেকোনো স্থানে মজলিসে খাছের জরুরী সভা আহ্বান করতে পারবেন।
৯. তাঁর যেকোনো নির্দেশ কুরআন ও হাদীসের বরখেলাপ না হওয়া পর্যন্ত সংগঠনের সবাইকে মেনে নিতে হবে।

ধারা-১৩ বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির অন্যান্য দায়িত্বশীল ও সদস্যগণের দায়িত্ব-কর্তব্য:
১. নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীন:
ক. নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীনগণ সর্বাবস্থায় আমীরুল মুজাহিদীনকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবেন।
খ. জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে আমীরুল মুজাহিদীনের অনুপস্থিতিতে তাঁর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন ও সভায় সভাপতিত্ব করবেন।

২. সেক্রেটারী জেনারেল:
ক. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির প্রধান নির্বাহী হিসেবে সেক্রেটারী জেনারেল কমিটির সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক সকল দায়িত্ব পালন করবেন। মজলিসে খাছের সভার সকল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
খ. তিনি প্রয়োজনবোধে সংগঠনের অধঃস্তন যেকোনো শাখা কমিটির কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিতাদেশ দিয়ে আহবায়ক কমিটি গঠন করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করবেন।
গ. তিনি আমীরুল মুজাহিদীনের অনুমোদনক্রমে মজলিসে খাছ ও মজলিসে আমের সভা আহ্বান করবেন।
ঘ. তিনি বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সার্বিক দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে আমীরুল মুজাহিদীনসহ মজলিসে খাছের কাছে দায়ী থাকবেন।
ঙ. তিনি বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি, আওতাধীন বিভিন্ন পর্যায়ের শাখা কমিটি ও মাদ্রাসাসমূহের সকল কার্যক্রম বিশেষ করে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বার্ষিক নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা করবেন।
৩. জয়েন্ট সেক্রেটারী:
তিনি সেক্রেটারী জেনারেলকে কমিটির সকল কাজে সর্বাবস্থায় সর্বপ্রকার সাহায্য ও সহায়তা প্রদান করবেন এবং সেক্রেটারী জেনারেলের অনুপস্থিতিতে তাঁর দায়িত্ব পালন করবেন।
৪. এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী:
তিনি সেক্রেটারী জেনারেল ও জয়েন্ট সেক্রেটারীকে সর্বোতভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদান করবেন এবং অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব পালন করবেন।

৫. ইমাম-কাম-অডিটর:
ক. তিনি বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির আওতাধীন যেকোনো শাখা কমিটির মাসিক ইজতিমা ও শবগুজারীসহ তা’লীম ও হালকায়ে যিকির তদারকি করবেন।
খ. তিনি সেক্রেটারী জেনারেলের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নীতিমালা অনুযায়ী ওয়াজ-নসিহত, তা’লীম ও হালকায়ে যিকির পরিচালনার ব্যাপারে বাস্তব প্রশিক্ষণ প্রদানের দায়িত্ব পালন করবেন।
গ. তিনি মুজাহিদগণের ইসলাহে নফসের ক্রমোন্নতির লক্ষ্যে সব ধরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে মজলিসে খাছের নিকট উপস্থাপন করবেন এবং মজলিসে খাছের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করবেন।
৬. সহকারী ইমাম-কাম-অডিটর:
তিনি সর্বাবস্থায় ইমাম-কাম-অডিটরকে সকল কাজে সহযোগিতা করবেন এবং ইমাম-কাম-অডিটরের অনুপস্থিতিতে তার উপর অর্পিত সকল দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন।
৭. সাংগঠনিক সম্পাদক:
তিনি সেক্রেটারী জেনারেলের সঙ্গে পরামর্শক্রমে সংগঠনের সম্প্রসারণ ও পরিধি বিস্তারের সকল দায়িত্ব পালন করবেন।
৮. সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক:
তিনি সাংগঠনিক সম্পাদকের সকল কার্যক্রমে সহযোগিতা করবেন এবং সাংগঠনিক সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে তার উপর অর্পিত সকল দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন।
৯. প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক:
তিনি সেক্রেটারী জেনারেল সাহেবের সঙ্গে পরামর্শক্রমে সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা কাজের সকল দায়িত্ব পালন করবেন এবং মুজাহিদ প্রকাশনীর সার্বিক উন্নতিকল্পে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এছাড়াও প্রকাশনায় কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের কাজকর্ম তদারকি করবেন। প্রয়োজনে সেক্রেটারী জেনারেলের নিকট রিপোর্ট দিবেন।
১০. সহকারী প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক:
তিনি সর্বাবস্থায় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকের সকল কাজে সহযোগিতা প্রদান করবেন।
১১. দপ্তর সম্পাদক:
তিনি বামুকের দাপ্তরিক নথিপত্র রক্ষণাবেক্ষণসহ বিভিন্ন দপ্তর ও শাখা কমিটিসমূহের সাথে সব ধরণের পত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যকর করবেন এবং অর্পিত অন্য যেকোনো দায়িত্ব পালন করবেন।
১২. সহকারী দপ্তর সম্পাদক:
তিনি সংগঠনের দাপ্তরিক সকল কাজে দপ্তর সম্পাদককে সহযোগিতা করবেন এবং অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব পালন করবেন।
১৩. কোষাধ্যক্ষ:
তিনি বামুকের হিসাব রক্ষক কর্তৃক তৈরীকৃত সংগঠনের সকল বিল/মেমো, ভাউচার, ক্যাশ বই, লেজার ইত্যাদির যথার্থতা তদারকি ও স্বাক্ষর করবেন।
১৪. কমান্ডার-১:
ক. তিনি আল্লাহর বান্দাগণকে আল্লাহর দিকে ডাকবেন এবং বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সংবাদাদি আদান-প্রদান করবেন।
খ. তিনি আমীরুল মুজাহিদীন ও সেক্রেটারী জেনারেল উভয়ের সঙ্গে পরামর্শক্রমে স্বেচ্ছাসেবক টিমের সকল কার্যক্রম আঞ্জাম দিবেন।
১৫.কমান্ডার-২:
তিনি কমান্ডার-১ -কে সর্বোতভাবে সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করবেন।
১৬. সদস্য:
বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সর্বোচ্চ পরিষদ মজলিসে খাছের সদস্য হিসেবে কমিটির সার্বিক উন্নয়ন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার পরামর্শ দিবেন এবং মজলিসে খাছের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব পালন করবেন।
ধারা-১৪ স্বেচ্ছাসেবক টিম:
ক. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির একটি স্বেচ্ছাসেবক টিম থাকবে।
খ. স্বেচ্ছাসেবক টিমের প্রধান হবেন আমীরুল মুজাহিদীন। তাঁর উপাধি হবে মহাপরিচালক। বামুকের সেক্রেটারী জেনারেল হবেন স্বেচ্ছাসেবক টিমের উপ-মহাপরিচালক। কেন্দ্রীয় কমিটির কমান্ডার-১ স্বেচ্ছাসেবক পরিচালক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির কমান্ডার-২ স্বেচ্ছাসেবক উপ-পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
গ. স্বেচ্ছাসেবক পরিচালক ও স্বেচ্ছাসেবক উপ-পরিচালক আমীরুল মুজাহিদীন ও সেক্রেটারী জেনারেলের সঙ্গে পরামর্শক্রমে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সকল কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
ঘ. স্বেচ্ছাসেবকদের কাজকর্মের ভালমন্দ দেখাশুনা এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়ার ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতার জন্য প্রত্যেক বিভাগীয় শাখা মুজাহিদ কমিটির সম্মানিত ছদর ও সাধারণ সম্পাদক পদাধিকার বলে স্বেচ্ছাসেবক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত হবেন।

ধারা-১৫ শাখা কমিটি:
বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির আওতাধীন শাখা কমিটিগুলো ৫ (পাঁচ)টি স্তরে বিভক্ত থাকবে :
১. বিভাগীয় শাখা মুজাহিদ কমিটি।
২. জিলা শাখা মুজাহিদ কমিটি।
৩. উপজিলা/থানা শাখা মুজাহিদ কমিটি।
৪. ইউনিয়ন/ সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা শাখা মুজাহিদ কমিটি। (পৌরসভা কমিটির মান হবে ইউনিয়ন সমপর্যায়ের।)
৫. মহল্লা/তা’লীম ও হালকায়ে যিকির কমিটি।

ধারা-১৬ শাখা কমিটি গঠন প্রণালী:
১. বিভাগ থেকে নিয়ে ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা পর্যন্ত শাখা কমিটিসমূহ ৩৫ (পঁয়ত্রিশ) সদস্য বিশিষ্ট হবে এবং তা নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে গঠিত হবে :
১. ছদর ১ জন।
২. ছদর নায়েবে ছদর ২ জন।
৩. সাধারণ সম্পাদক ১ জন।
৪. যুগ্ম সম্পাদক ১ জন।
৫. ইমাম-কাম-অডিটর ১ জন।
৬. সহকারী ইমাম-কাম-অডিটর ১ জন।
৭. সাংগঠনিক সম্পাদক ১ জন।
৮. সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক ১ জন।
৯. প্রচার সম্পাদক ১ জন।
১০. সহকারী প্রচার সম্পাদক ১ জন।
১১. দপ্তর সম্পাদক ১ জন।
১২. সহকারী দপ্তর সম্পাদক ১ জন।
১৩. কোষাধ্যক্ষ ১ জন।
১৪. কমান্ডার ২ জন।
১৫. সদস্য ১৯ জন।
মোট = ৩৫ জন।

২. যে সকল সাংগঠনিক এলাকায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক মুজাহিদ পাওয়া যাবে না, সেখানে স্বল্প সংখ্যক মুজাহিদগণের সমন্বয়ে সাময়িকভাবে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা যাবে।

৩. তা’লীম ও হালকায়ে যিকির কমিটির সদস্য সংখ্যা হবে কমপক্ষে ১৫ (পনের) জন। যার বিবরণ নিম্নরূপ:
১. ইমাম ১ জন।
২. সহকারী ইমাম ১ জন।
৩. প্রেসিডেন্ট ১ জন।
৪. সহকারী প্রেসিডেন্ট ১ জন।
৫. সেক্রেটারী ১ জন।
৬. কমান্ডার বা দায়ী ইলাল্লাহ ৫ জন।
৭. সদস্য ৫ জন।
মোট = ১৫ জন।

ধারা-১৭ শাখা কমিটি গঠন পদ্ধতি:
১. বিভাগীয় কমিটি:
ক. আমীরুল মুজাহিদীন অথবা সেক্রেটারী জেনারেল সদ্য বিলুপ্ত বিভাগীয় শাখা মুজাহিদ কমিটির ৩৫ জন দায়িত্বশীল ও সদস্য এবং বিভাগের আওতাধীন জিলা কমিটিসমূহের ৪ জন করে দায়িত্বশীল যথা- ছদর, সাধারণ সম্পাদক, ইমাম-কাম-অডিটর ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাহেবগণের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বিভাগীয় কমিটির ছদর ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৬ জন দায়িত্বশীল মনোনীত করবেন।
খ. মনোনীত দায়িত্বশীলগণ সভা ডেকে পরামর্শ করে বাকী ১৯ জন সদস্য মনোনীত করবেন।
২. জিলা কমিটি:
ক. জিলা কমিটি পুনর্গঠনের এক মাস পূর্বে বিভাগীয় কমিটি কর্তৃক সংশ্লিষ্ট জিলা কমিটির আর্থিক ও দাপ্তরিক বিষয়াদি নিরীক্ষা পূর্বক হস্তমজুদ তহবিলসহ (যদি থাকে) সকল নথিপত্র ৩ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে তাদের নিকট তালিকা করে বুঝিয়ে দিতে হবে। পুরানো কমিটির নিকট কিছুই অবশিষ্ট রাখা যাবে না। আহ্বায়ক কমিটি জিলার আওতাধীন যে সকল থানা কমিটি পুনর্গঠিত হয়নি সে সকল কমিটি যথা নিয়মে পুনর্গঠন করবেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাতে সুষ্ঠুভাবে জিলা কমিটি পুনর্গঠন করা যায় তার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কমিটি পুনর্গঠনের পর সকল মালামাল নতুন কমিটির নিকট বুঝিয়ে দিবেন।
খ. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সেক্রেটারী জেনারেল কর্তৃক মনোনীত কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্বশীল/সদস্যের নেতৃত্বে বিভাগীয় কমিটির ছদর অথবা সাধারণ সম্পাদক এবং বিভাগীয় কমিটির ১ জন দায়িত্বশীল-এর সমন্বয়ে গঠিত ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি কর্তৃক সদ্য বিলুপ্ত জিলা শাখা মুজাহিদ কমিটির ৩৫ জন দায়িত্বশীল ও সদস্য এবং জিলার আওতাধীন থানা কমিটিসমূহের ৪ জন করে দায়িত্বশীল যথা- ছদর, সাধারণ সম্পাদক, ইমাম-কাম-অডিটর ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাহেবগণের সঙ্গে পরামর্শক্রমে জিলা কমিটির ছদর ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৬ জন দায়িত্বশীল মনোনীত করবেন।
গ. মনোনীত দায়িত্বশীলগণ সভা ডেকে পরামর্শ করে বাকী ১৯ জন সদস্য মনোনীত করবেন। এক্ষেত্রে আহ্বায়ক কমিটির সদস্যগণ পুনর্গঠিত কমিটির দায়িত্বশীল মনোনয়নে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।
৩. উপজিলা/থানা কমিটি:
ক. জিলা কমিটির ছদর অথবা সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ২ জন সদ্য বিলুপ্ত উপজিলা/থানা শাখা মুজাহিদ কমিটির ৩৫ জন দায়িত্বশীল ও সদস্য এবং থানার আওতাধীন ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা কমিটিসমূহের ৪ জন করে দায়িত্বশীল যথা- ছদর, সাধারণ সম্পাদক, ইমাম-কাম-অডিটর ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাহেবগণের সঙ্গে পরামর্শক্রমে উপজিলা/থানা কমিটির ছদর ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৬ জন দায়িত্বশীল মনোনীত করবেন।
খ. মনোনীত দায়িত্বশীলগণ সভা ডেকে পরামর্শ করে বাকী ১৯ জন সদস্য মনোনীত করবেন।

৪. ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা কমিটি:
ক. উপজিলা/থানা কমিটির ছদর অথবা সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ২ জন সদ্য বিলুপ্ত ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা শাখা মুজাহিদ কমিটির ৩৫ জন দায়িত্বশীল ও সদস্য এবং ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভার আওতাধীন মহল্লা/তা’লীম ও হালকায়ে যিকির কমিটিসমূহের ৩ জন করে দায়িত্বশীল যথা- ইমাম, প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারী সাহেবগণের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা কমিটির ছদর ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৬ জন দায়িত্বশীল মনোনীত করবেন।
খ. মনোনীত দায়িত্বশীলগণ সভা ডেকে পরামর্শ করে বাকী ১৯ জন সদস্য মনোনীত করবেন।
৫. মহল্লা/তা’লীম ও হালকায়ে যিকির কমিটি:
ক. ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা কমিটির ছদর অথবা সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ২ জন গ্রাম/মহল্লার মুজাহিদগণের সঙ্গে পরামর্শ করে ‘জেহাদে ইসলাম’ কিতাবের নির্দেশের আলোকে কেন্দ্রীয় কমিটির ছাপানো হালকায়ে যিকির কমিটির ফরমে একটি পূর্ণাঙ্গ তা’লীম ও হালকায়ে যিকির কমিটি গঠন করবেন। খ. গ্রাম/মহল্লার প্রতিটি তা’লীম ও হালকায়ে যিকির কমিটি এক একটি সাংগঠনিক শাখা কমিটি হিসেবে গণ্য হবে।
৬. ক. যদি কোনো ব্যক্তির কাজে-কর্মে, কথাবার্তায় বা ইশারা-ইঙ্গিতে দায়িত্ব পেতে ইচ্ছুক এমন মনোভাব প্রকাশ পায় তবে কোনোভাবেই ঐ ব্যক্তিকে কমিটির দায়িত্বশীল মনোনীত করা যাবে না।
খ. শাখা কমিটিসমূহের দায়িত্বশীল মনোনয়নের ব্যাপারে কোনো প্রকার পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না। পক্ষপাতিত্ব করলে তাকে অবশ্যই আল্লাহ তা‘আলার কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

ধারা-১৮ শাখা কমিটিসমূহের দায়িত্বশীল ও সদস্যগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য:
বিভাগ থেকে নিয়ে ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা কমিটি পর্যন্ত শাখা সংগঠনসমূহের দায়িত্বশীল ও সদস্যগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য :
১. ছদর:
ক. তিনি কমিটির সকল সভায় সভাপতিত্ব করবেন।
খ. তিনি সভায় গৃহিত সিদ্ধান্তসমূহ যথারীতি বাস্তবায়নের জন্য সাধারণ সম্পাদককে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিবেন।
২. নায়েবে ছদর:
ক. তিনি জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে ছদর সাহেবের অনুপস্থিতিতে যেকোনো সভায় সভাপতিত্ব করবেন।
খ. তিনি ছদর সাহেবকে কমিটির সকল কাজে সার্বিক সহযোগিতা করবেন।
৩. সাধারণ সম্পাদক:
ক. তিনি কমিটির ছদর সাহেবের পরামর্শক্রমে কমিটির সভা আহ্বান করবেন।
খ. তিনি সভায় গৃহিত সিদ্ধান্তসমূহ রেজুলেশন বইতে লিপিবদ্ধ করে যথাসময়ে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
গ. তিনি কমিটির সার্বিক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে সময়োচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
৪. যুগ্ম সম্পাদক:
তিনি সর্বাবস্থায় সাধারণ সম্পাদককে সকল কাজে সহযোগিতা করবেন এবং সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে তাঁর সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন।
৫. ইমাম-কাম-অডিটর:
ক. তিনি ছদর ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে পরামর্শক্রমে কমিটির মাসিক ইজতিমা ও শবগুজারী পরিচালনা করবেন। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদির ব্যবস্থা করবেন। নিকটতম অধঃস্তন কমিটির মাসিক ইজতিমা ও শবগুজারীতে উপস্থিত থাকবেন।
খ. তিনি মাসিক ইজতিমা ও শবগুজারী বামুকের নীতিমালা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হয় কি-না তা তদারকি করবেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে লিখিত প্রতিবেদন তাঁর নিজস্ব কমিটির সাধারণ সম্পাদকের নিকট নিয়মিতভাবে দাখিল করবেন।
গ. তিনি স্থানীয়ভাবে তা’লীম ও হালকায়ে যিকির কমিটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে ইমাম-প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবেন। নিকটতম অধঃস্তন কমিটির মাসিক প্রতিবেদন ফরম নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংগ্রহ করে তাঁর নিজস্ব কমিটির সাধারণ সম্পাদকের নিকট জমা দিবেন।
ঘ. তিনি স্থানীয়ভাবে গঠনকৃত তা’লীম ও হালকায়ে যিকির কমিটিগুলো সাংগঠনিক নিয়মে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে রেজিট্রেশন করানোর ব্যবস্থা করবেন।
৬. সহকারী ইমাম-কাম-অডিটর:
ক. তিনি সর্বাবস্থায় ইমাম-কাম-অডিটরকে সকল কাজে সহযোগিতা করবেন এবং ইমাম-কাম-অডিটরের অনুপস্থিতিতে তাঁর সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন।
খ. তিনি ছদর/সাধারণ সম্পাদকের পরামর্শক্রমে ইমাম-কাম-অডিটরের প্রণীত সফরসূচি অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন।
৭. সাংগঠনিক সম্পাদক:
তিনি সংগঠনের সম্প্রসারণ ও সাংগঠনিক কার্যক্রমের ক্রমোন্নতির লক্ষ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন এবং সেগুলো বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এই ব্যাপারে তিনি অবশ্যই কমিটির সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে পরামর্শ করে কার্য সম্পাদন করবেন।
৮. সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক:
তিনি সংগঠনের সাংগঠনিক সকল কাজে সাংগঠনিক সম্পাদককে সব ধরণের সহযোগিতা করবেন।
৯. প্রচার সম্পাদক:
তিনি সংগঠনের সভা, সমাবেশ, আদর্শ, লক্ষ্য ইত্যাদি বাস্তবায়নে সব ধরণের প্রচারের দায়িত্ব পালন করবেন।
১০. সহকারী প্রচার সম্পাদক:
তিনি সর্বাবস্থায় প্রচার সম্পাদকের সকল কাজে সহযোগিতা করবেন।
১১. দপ্তর সম্পাদক:
তিনি সংগঠনের দাপ্তরিক রেকর্ড, কাগজপত্র রক্ষণাবেক্ষণের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। সব ধরণের যোগাযোগ রক্ষা করবেন।
১২. সহকারী দপ্তর সম্পাদক:
তিনি সর্বাবস্থায় সংগঠনের দাপ্তরিক সকল কাজে দপ্তর সম্পাদককে সহযোগিতা করবেন।
১৩. কোষাধ্যক্ষ:
তিনি সংগঠনের সকল আয়-ব্যয়ের হিসাব পরিপালন করবেন এবং অনুমোদিত বিল/ ভাউচার মোতাবেক টাকা প্রদান করবেন।
১৪. কমান্ডার ১ ও ২:
ক. তাঁরা আল্লাহর বান্দাগণকে আল্লাহর পথে ডাকবেন।
খ. তাঁরা সংগঠনের ওয়াজ মাহফিল ও সমাবেশে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
গ. তাঁরা সংগঠনের সব ধরণের চিঠি-পত্র আদান-প্রদান করবেন।
ঘ. তাঁরা কমিটির ছদর/সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে পরামর্শক্রমে স্থানীয়ভাবে স্বেচ্ছাসেবক টিমের সকল দায়িত্ব পালন করবেন।
১৫. সদস্য:
ক. সদস্যগণ কমিটির সার্বিক উন্নয়ন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার পরামর্শ দিবেন।
খ. তাঁরা সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব পালন করবেন।
১৬. গ্রাম/মহল্লা কমিটির দায়িত্বশীল ও সদস্য:
গ্রাম/মহল্লা কমিটির দায়িত্বশীল ও সদস্যগণ ‘জেহাদে ইসলাম’ কিতাবের আলোকে দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পাদন করবেন।

ধারা-১৯ উপদেষ্টা পরিষদ:
বিভাগ থেকে নিয়ে উপজিলা/থানা শাখা মুজাহিদ কমিটি পর্যন্ত প্রতিটি শাখায় প্রয়োজনবোধে সর্বোচ্চ ১১ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি গঠন করতে পারবেন। তাদের মধ্যে ১ জন প্রধান উপদেষ্টা এবং বাকী ১০ জন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এক্ষেত্রে প্রাক্তন দায়িত্বশীলদের মধ্য থেকে শারীরিক সক্ষমতা সম্পন্নদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

ধারা-২০ উপদেষ্টা পরিষদের দায়িত্ব ও কর্তব্য:
উপদেষ্টা পরিষদের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিম্নে বর্ণিত হলো-
ক. সংশ্লিষ্ট কমিটির সাংগঠনিক কর্মকান্ডে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিবেন।
খ. সংশ্লিষ্ট কমিটির মাসিক সভায় উপস্থিত থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে পারবেন।
গ. সংশ্লিষ্ট কমিটির দায়িত্বশীল ও সদস্যদের ন্যয় নির্ধারিত হারে মাসিক দান নিয়মিত প্রদান করবেন।
ঘ. সংশ্লিষ্ট কমিটির আভ্যন্তরীন এবং আওতাধীন অধঃস্তন কমিটিসমূহে কোনো বিশৃঙ্খলা বা সমস্যা সৃষ্টি হলে তা নিরসনকল্পে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

ধারা-২১ কমিটিসমূহের দায়িত্বশীল ও সদস্যগণের যোগ্যতা ও গুনাবলী
ক. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির শাখা কমিটিসমূহের প্রত্যেক দায়িত্বশীল ও সদস্যগণের অবশ্যই নিম্নবর্ণিত যোগ্যতা ও গুণাবলী থাকতে হবে:
১. সদস্য ফরম পূরণ পূর্বক মুজাহিদ কমিটির সদস্য হতে হবে।
২. আল্লাহভীরু ও দ্বীনদার মুমিন হতে হবে।
৩. ছহীহ শুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াতে সক্ষম হতে হবে।
৪. পাঁচ ঔষধ, তিন ছবক ও তিন শর্ত পালনকারী হতে হবে।
৫. মোয়ামালাত ও মোয়াশারাত ঠিক হতে হবে।
৬. শরীয়ত বিরোধী কোনো কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারবে না।
৭. মাসিক দান পরিশোধে নিয়মিত হতে হবে।
৮. উপরস্থ কমিটির নির্দেশিত সকল কর্মসূচি যথাযথভাবে বাস্তবায়নে সক্রিয় হতে হবে।
৯. উপরস্থ কমিটির দায়িত্বশীলগণের সফরকালীন সময়ে স্থানীয় সকল প্রকার সাংগঠনিক ও তারবিয়াতী বৈঠকে উপস্থিত থাকতে হবে।
১০. দ্বীনি সংগঠনসহ দ্বীন কায়েম সংগঠনের সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে হবে।
১১. মজলিসে আমের বৈঠকে যথাসময়ে উপস্থিতিসহ আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত থাকতে হবে।
১২. রমযানে চরমোনাইতে তা’লীম-তারবিয়াতে যোগদান ও নির্ধারিত সময় পর্যন্ত তা’লীম-তারবিয়াতে অংশগ্রহণ করতে হবে।
১৩. একই ব্যক্তি একাধিক দায়িত্বে থাকতে পারবে না। বিশেষ ক্ষেত্রে উক্ত শর্ত শিথিল করা যেতে পারে।
১৪. একই ব্যক্তি পর পর একই দায়িত্বে দুই টার্মের বেশি থাকতে পারবে না। তবে সংগঠনের কাজের স্বার্থে কোথাও কোথাও বিশেষ প্রয়োজনে আলোচ্য শর্ত শিথিল করা যেতে পারে।
১৫. রাষ্ট্রবিরোধী বা রাষ্ট্রীয় শৃংখলা পরিপন্থী কোনো প্রকার ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকতে পারবে না।
১৬. গঠনতন্ত্রে বর্ণিত স্ব স্ব দায়িত্ব পালনে অনুগত থাকতে হবে।
১৭. দ্বীন কায়েম সংগঠনের অবশ্যই কর্মী হতে হবে।
১৮. একই সময়ে একই ব্যক্তি দ্বীনি সংগঠন ও দ্বীন কায়েম সংগঠনের দায়িত্বশীল হতে পারবে না। তবে সদস্য হিসেবে থাকতে পারবেন।
খ. মুজাহিদ কমিটির কোনো শাখার দায়িত্বশীল মনোনয়নের বেলায় উপযুক্ত ব্যক্তির সংকট দেখা দিলে এবং দ্বীন কায়েম সংগঠন বা কোনো সহযোগী সংগঠনের কাউকে উক্ত পদের জন্য অধিকতর উপযুক্ত মনে হলে, সেক্ষেত্রে বৃহত্তর স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সভাপতি ও সেক্রেটারীর সাথে আলোাচনা করে তাদের সম্মতিক্রমে তাঁকে মনোনয়ন দেয়া যাবে। তবে পূর্বের সংগঠনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি তথা ছাড়পত্র নিতে হবে।

ধারা-২২ মুজাহিদ সদস্যগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য
১. চরমোনাই-এর মরহুম পীর হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ এছহাক রহ. লিখিত ‘জেহাদে ইসলাম’ কিতাবে মুজাহিদগণকে যে যে কাজ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা পালন করবেন।
২. ক. তরীকার ৫ (পাঁচ) ঔষধ, ৩ (তিন) সবক, ৩ (তিন) শর্ত নিয়ম মাফিক ও রীতিমত পালন করবেন।
খ. দ্বীনভোলা ও পথহারা বান্দাদেরকে আল্লাহর পথের দাওয়াত দিবেন।
গ. তরীকা ও সংগঠনের পরিপন্থী যেকোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন।

ধারা-২৩ সভা
১. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির মজলিসে খাছের সভা কমিটির সদর দপ্তর চরমোনাইতে অনুষ্ঠিত বার্ষিক মাহফিলের সময় দুইবার এবং কমিটির কার্যকরী সদর দপ্তর ঢাকায় একবার অনুষ্ঠিত হবে।
২. প্রয়োজনবোধে আমীরুল মুজাহিদীনের সাথে পরামর্শক্রমে সেক্রেটারী জেনারেল যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে মজলিসে খাছের জরুরী সভা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
৩. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির মজলিসে আমের সভা কার্যকরী সদর দপ্তর ঢাকায় বছরে একবার অনুষ্ঠিত হবে। এটা কমিটির বার্ষিক সভা হিসেবে গণ্য হবে।
৪. বিভাগ থেকে নিয়ে ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা পর্যন্ত প্রত্যেক শাখা কমিটির সভা প্রতিমাসে একবার এবং সাধারণ সভা বছরে একবার অনুষ্ঠিত হবে।

ধারা-২৪ সভা আহবান:
সাধারণ সভার জন্য কমপক্ষে ৭ (সাত) দিনের নোটিশ দিয়ে সভা আহবান করতে হবে। জরুরী সভার জন্য ১২ (বার) ঘন্টার মধ্যে নোটিশ দিলেই চলবে।

ধারা-২৫ কোরাম:
যেকোনো কমিটির সভায় মোট সদস্যের ৩ (তিন) ভাগের এক ভাগ সদস্য উপস্থিত থাকলেই সভার কোরাম পূর্ণ হবে। মূলতবী সভার জন্য কোনো কোরামের প্রয়োজন হবে না।

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ
তহবিল
ধারা-২৬ তহবিল গঠন:
মুজাহিদ সদস্যগণ কর্তৃক প্রদত্ত দান এবং অন্যান্য দ্বীন-দরদী ও দানশীল ভাইদের এককালীন দানের মাধ্যমে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির তহবিল গঠিত হবে।
ধারা-২৭ মাসিক দান:
১. মহল্লা/তা’লীম ও হালকায়ে যিকির কমিটির প্রত্যেক সদস্য মাসে কমপক্ষে ২০/- (বিশ) টাকা করে নিজ নিজ হালকায়ে যিকির কমিটিতে দান করবেন।
২. প্রতিটি ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা শাখা মুজাহিদ কমিটির দায়িত্বশীল /সদস্যগণ মাসে কমপক্ষে ৩০/- (ত্রিশ) টাকা করে নিজ নিজ কমিটিতে দান করবেন।
৩. প্রতিটি উপজিলা/থানা শাখা মুজাহিদ কমিটির দায়িত্বশীল/সদস্যগণ প্রতি মাসে কমপক্ষে ৫০/- (পঞ্চাশ) টাকা করে নিজ নিজ কমিটিতে দান করবেন।
৪. প্রতিটি জিলা শাখা মুজাহিদ কমিটির দায়িত্বশীল/সদস্যগণ প্রতি মাসে কমপক্ষে ৮০/- (আশি) টাকা করে নিজ নিজ কমিটিতে দান করবেন।
৫. প্রতিটি বিভাগীয় শাখা মুজাহিদ কমিটির দায়িত্বশীল/সদস্যগণ প্রতি মাসে কমপক্ষে ১০০/- (একশত) টাকা করে নিজ নিজ কমিটিতে দান করবেন।
৬. মজলিসে খাছের প্রত্যেক দায়িত্বশীল/সদস্য প্রতি মাসে কমপক্ষে ২০০/- (দুইশত) টাকা করে কেন্দ্রীয় তহবিলে দান করবেন।
৭. প্রতিটি মহল্লা/তা’লীম ও হালকায়ে যিকির কমিটি ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা কমিটিকে প্রতি মাসে ৫০/- (পঞ্চাশ) টাকা করে দান করবেন।
৮. প্রতিটি ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা কমিটি উপজিলা/থানা তহবিলে প্রতি মাসে ১০০/- (একশত) টাকা করে দান করবেন।
৯. প্রতিটি উপজিলা/থানা কমিটি জিলা তহবিলে প্রতি মাসে ২০০/- (দুইশত) টাকা করে দান করবেন।
১০. প্রতিটি জিলা কমিটি প্রতি মাসে বিভাগীয় তহবিলে ৫০০/- (পাঁচশত) টাকা এবং কেন্দ্রীয় তহবিলে ৫০০/- (পাঁচশত) টাকা করে দান করবেন।

ধারা-২৮ ব্যয়ের খাত:
বিভিন্ন পর্যায়ের শাখা মুজাহিদ কমিটি সমূহের সাংগঠনিক কার্যাবলী পরিচালনা এবং গঠনতন্ত্রের উদ্দেশ্যাবলী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংগৃহীত তহবিল ব্যয় করা যাবে। সব ধরণের খরচের যথাযথ হিসাব নিয়ম মাফিক সংরক্ষণ করতে হবে।
ধারা-২৯ ব্যয় নির্বাহ:
১. ক. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির প্রধান নির্বাহী হিসেবে সেক্রেটারী জেনারেল সব ধরণের ব্যয় ও খরচাদি নির্বাহ করবেন।
খ. এককালীন ব্যয়ের ক্ষেত্রে ‘অর্থ সংগ্রহ ও ব্যয় নির্বাহ কমিটি’ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা কোনোভাবেই অতিক্রম করতে পারবেন না।
গ. নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত খরচের জন্য ‘অর্থ সংগ্রহ ও ব্যয় নির্বাহ কমিটি’-এর অনুমোদন নিতে হবে।
২. ক. বিভাগ থেকে নিয়ে উপজিলা/থানা কমিটিসমূহের ক্ষেত্রে নিজ নিজ কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্ব-স্ব কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণ টাকা এককালীন খরচ করতে এবং হস্ত মজুদ হিসেবে ক্যাশে জমা রাখতে পারবেন।
খ. খরচের ক্ষেত্রে নিজ নিজ কমিটির পূর্ণাঙ্গ মাসিক সভায় সংশ্লিষ্ট বিল/ভাউচার উত্থাপন করে অনুমোদন নিতে হবে।
গ. সীমাতিরিক্ত হস্ত মজুদের টাকা সাথে সাথে কমিটির ব্যাংক হিসাবে জমা দিতে হবে। হস্ত মজুদের নির্ধারিত অংকের পরিমান নিম্নরূপ:
১. বিভাগীয় শাখা ২০,০০০/- টাকা।
২. জিলা শাখা ১০,০০০/- টাকা।
৩. উপজিলা/থানা শাখা ৫,০০০/- টাকা।
৩. ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা থেকে মহল্লা/তা’লীম ও হালকায়ে যিকির কমিটিসমূহের ক্ষেত্রে নিজ নিজ কমিটির সাধারণ সম্পাদক/সেক্রেটারী, ছদর/ ইমামের সঙ্গে পরামর্শক্রমে সংশ্লিষ্ট কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণ টাকা খরচ করতে পারবেন।

ধারা-৩০ ব্যাংক হিসাব:
১. ক. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সকল টাকা ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক পরিচালিত ব্যাংকে জমা রাখতে হবে।
খ. কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারী জেনারেল অথবা জয়েন্ট সেক্রেটারী এবং কোষাধ্যক্ষ অথবা দপ্তর সম্পাদকের যুগ্ম স্বাক্ষরে ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হবে।
২. ক. বিভাগ থেকে নিয়ে ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা শাখা মুজাহিদ কমিটি পর্যন্ত সকল শাখা কমিটির টাকাও ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক পরিচালিত ব্যাংকে জমা রাখতে হবে।
খ. সংশ্লিষ্ট কমিটির ছদর অথবা সাধারণ সম্পাদক এবং কোষাধ্যক্ষের যুগ্ম স্বাক্ষরে ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হবে।

ধারা-৩১ অর্থ সংগ্রহ ও ব্যয় নির্বাহ কমিটি:
অর্থ সংগ্রহ ও ব্যয় নির্বাহ কমিটির দায়িত্ব ও কর্তব্য নিম্নরূপ:
১. আলোচ্য কমিটি বামুকের বেতনভুক কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের নিয়োগদান ও অব্যাহতি প্রদানসহ তাদের বেতন/ভাতা নির্ধারণ ও বৃদ্ধি করণের বিষয়টি বাস্তবায়ন করবে। এছাড়া কাজের স্বার্থে বামুকের যে সকল দায়িত্বশীল অধিকাংশ সময়ে বামুকের অফিসে প্রয়োজনীয় কার্যাদি সম্পাদন করেন তাদের সম্মানী প্রদানের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
২. বামুকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের জন্য ছুটির বিধিমালা প্রণয়ন পূর্বক তাদেরকে বিধি অনুসারে ছুটি ভোগের বিহিত ব্যবস্থা করবে।
৩. ক. বামুকের আয় বাড়ানোর খাতসমূহ আরো সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে কৌশলী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
খ. ব্যয় সংকোচন নীতির অনুসরণসহ সার্বিক আয়-ব্যয়ের হিসাব তদারকি করবে।
গ. বামুকের প্রধান নির্বাহী (সেক্রেটারী জেনারেল)-এর খরচের নির্ধারিত পরিমাণ অতিক্রান্ত হলে তার ভুতাপেক্ষ অনুমোদন প্রদানের ব্যবস্থা করবে।
৪. সারা দেশ থেকে আগত আর্থিক সাহায্যের আবেদন পর্যালোচনা করে কল্যাণ তহবিল হতে আর্থিক সাহায্য মঞ্জুর করবে।
৫. মুজাহিদ প্রকাশনীর কিতাবাদি ছাপানোর ব্যাপারে প্রচলিত বিধি অবলম্বন করে ছাপানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
৬. চরমোনাই মাদরাসার টাকা আদায়ের রশিদ বই, আবেদনপত্র এবং রমাযানের হাদিয়া ক্যালেন্ডার দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ছাপানোর ব্যবস্থা করবে।
৭. বামুকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকে কর্জ প্রাপ্তির আবেদনপত্রের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
৮. অর্থ ও কল্যাণ সংক্রান্ত জাতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ‘অর্থ সংগ্রহ ও ব্যয় নির্বাহ কমিটি’র সদস্যসহ বামুকের মজলিসে খাছের প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্যের উপস্থিতিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

ধারা-৩২ নিরীক্ষা:
১. আমীরুল মুজাহিদীন হযরত পীর সাহেব হুযূর কর্তৃক মনোনীত মজলিসে খাছের সদস্যগণ কর্তৃক প্রতি অর্থবছরে বামুকের সকল কার্যক্রম ও আয়-ব্যয় হিসাব নিরীক্ষা কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
২. ক. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি কর্তৃক বিভাগীয় শাখা মুজাহিদ কমিটি ও বিভাগের আওতাধীন সকল জিলা শাখা মুজাহিদ কমিটির সাংগঠনিক ও আর্থিক অডিট সম্পন্ন করতে হবে।
খ. চরমোনাই জামেয়াসহ মুজাহিদ কমিটি কর্তৃক পরিচালিত বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন মাদ্রাসাসমূহের সকল কার্যক্রম ও আয়-ব্যয় হিসাব নিরীক্ষা কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
গ. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি যেকোনো সময় যেকোনো শাখা কমিটি এবং মাদ্রাসার সকল কার্যক্রম ও আয়-ব্যয় হিসাব নিরীক্ষা করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।
৩. জিলা কমিটিসমূহের দায়িত্বশীলগণ কর্তৃক জিলার আওতাধীন উপজিলা/থানা কমিটিসমূহের সকল কার্যক্রম ও আয়-ব্যয় হিসাব নিরীক্ষা কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
৪. থানা কমিটিসমূহের দায়িত্বশীলগণ কর্তৃক থানার আওতাধীন ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা কমিটিসমূহের সকল কার্যক্রম ও আয়-ব্যয় হিসাব নিরীক্ষা কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
৫. ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা কমিটিসমূহের দায়িত্বশীলগণ কর্তৃক তাদের আওতাধীন মহল্লা/তা’লীম ও হালকায়ে যিকির কমিটিসমূহের সকল কার্যক্রম ও আয়-ব্যয় হিসাব নিরীক্ষা কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
৬. বামুকের বিভিন্ন পর্যায়ের শাখা কমিটিসমূহের সকল কার্যক্রম ও আয়-ব্যয় হিসাব নিরীক্ষা কাজ সম্পাদন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরী করে এক কপি নিজস্ব নথিতে সংরক্ষণ করবে, এক কপি উপরস্থ কমিটিতে জমা দিবে এবং এক কপি সংশ্লিষ্ট শাখা কমিটিতে প্রেরণের ব্যবস্থা করবে।

ধারা-৩৩ নিরীক্ষা কাল:
মুজাহিদ কমিটির জন্য ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত অর্থবছর এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য ১ জানুয়ারী থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ষপঞ্জি গণ্য করা হবে।

ধারা-৩৪ কল্যাণ তহবিল:
১. কল্যাণ তহবিল গঠন:
বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির কল্যাণ তহবিল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দানের মাধ্যমে গঠিত হবে।
২. খরচের খাত:
কল্যাণ তহবিলের অর্থ দুঃস্থ মানবতার সেবা, গরীব ও অসহায় রোগীদের চিকিৎসা, এতিম ও গরীব মেয়েদের বিবাহকার্য সম্পাদনের জন্য খরচ করা যাবে।

সপ্তম পরিচ্ছেদ
বিবিধ
ধারা-৩৫ সদস্যপদ বাতিল:
১. কমিটির সদস্যপদ বাতিল:
যেকোনো কমিটির যেকোনো দায়িত্বশীল/সদস্য উপযুক্ত/গ্রহণযোগ্য কারণ ব্যতীত পরপর কমিটির ৩ (তিন) সভায় অনুপস্থিত থাকলে বা শরীয়ত পরিপন্থী কোনো কাজ করলে তার কমিটির সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে।
২. মুজাহিদ সদস্যপদ বাতিল:
আমীরুল মুজাহিদীন যেকোনো কারণে মজলিসে খাছের সাথে পরামর্শক্রমে যেকোনো মুজাহিদ সদস্যের সদস্যপদ বাতিল করতে পারবেন।

ধারা-৩৬ কমিটির দায়িত্বশীল ও সদস্যগণের অপসারণ/বরখাস্ত:
১. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির যেকোনো দায়িত্বশীল/সদস্যকে তার অসদাচরণ/অযোগ্যতার দায়ে আমীরুল মুজাহিদীন মজলিসে খাছের অন্যান্য সদস্যগণের সঙ্গে পরামর্শক্রমে অপসারণ/বরখাস্ত করতে পারবেন।
২. ক. বিভাগ থেকে নিয়ে ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা পর্যন্ত যেকোনো শাখা কমিটির ছদর ও সাধারণ সম্পাদক ব্যতীত অন্য যেকোনো দায়িত্বশীল/ সদস্যের অসদাচরণ/অযোগ্যতার কারণে নিজ নিজ কমিটির ছদর ও সাধারণ সম্পাদক কমিটির অন্যান্য সদস্যগণের সঙ্গে পরামর্শক্রমে উক্ত দায়িত্বশীল /সদস্যকে অপসারণ করতে পারবেন।
খ. মহল্লা কমিটির ইমাম বা প্রেসিডেন্ট ব্যতীত অন্য যেকোনো দায়িত্বশীল/ সদস্যের অসদাচরণ/অযোগ্যতার কারণে ইমাম বা প্রেসিডেন্ট কমিটির অন্যান্য সদস্যগণের সঙ্গে পরামর্শক্রমে উক্ত দায়িত্বশীল/সদস্যকে অপসারণ করতে পারবেন।
গ. নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে এক ধাপ উপরের কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে উক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
ঘ. ছদর ও সাধারণ সম্পাদক এবং ইমাম বা প্রেসিডেন্টের বেলায় তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে এক ধাপ উপরের কমিটির ছদর ও সাধারণ সম্পাদক সংশ্লিষ্ট কমিটির অন্যান্য দায়িত্বশীল ও সদস্যগণের সঙ্গে পরামর্শক্রমে অপসারণ/বরখাস্ত করতে পারবেন।
ঙ. অপসারণ/বরখাস্তের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত দায়িত্বশীল/সদস্যকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে।
৩. আমীরুল মুজাহিদীনের অপসারণ:
আমীরুল মুজাহিদীন প্রকাশ্যে শরীয়ত বিরোধী কোনো কাজ করলে এবং শরীয়ত সম্মতভাবে সংশোধনের পরামর্শ দেয়া সত্ত্বেও যদি তিনি তা গ্রহণ না করেন বা সংশোধিত না হন, তবে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির মজলিসে খাছ ও শায়েখ রহ. এর খলীফাগণের তিন চতুর্থাংশ ভোটে তাঁকে আমীরুল মুজাহিদীনের পদ থেকে অপসারণ করা যাবে।

ধারা-৩৭ সালিশ বোর্ড:
১. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সকল স্তরের দায়িত্বশীল/সদস্যদের নিজেদের মধ্যকার পারস্পরিক বিরোধ নিরসনকল্পে কেন্দ্র, বিভাগ ও জিলা পর্যায়ে ‘সালিশ বোর্ড’-এর ব্যবস্থা থাকবে।
২. ‘সালিশ বোর্ড’ ৫ (পাঁচ) সদস্য বিশিষ্ট হবে।
ক. ‘জিলা সালিশ বোর্ড’-এর সদস্য থাকবেন জিলা শাখা মুজাহিদ কমিটির ছদর, সাধারণ সম্পাদক ও ইমাম-কাম-অডিটর এবং দ্বীন কায়েম সংগঠনের জিলা শাখার সভাপতি ও সেক্রেটারী।
খ. ‘বিভাগীয় সালিশ বোর্ড’-এর সদস্য থাকবেন বিভাগীয় শাখা মুজাহিদ কমিটির ছদর, সাধারণ সম্পাদক ও ইমাম-কাম-অডিটর এবং দ্বীন কায়েম সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির মজলিসে আমেলার ২ (দুই) জন দায়িত্বশীল।
গ. ‘কেন্দ্রীয় সালিশ বোর্ড’-এর সদস্য থাকবেন বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সেক্রেটারী জেনারেল, জয়েন্ট সেক্রেটারী ও এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী অথবা অন্য ১ (এক) জন দায়িত্বশীল এবং দ্বীন কায়েম সংগঠনের মহাসচিবসহ মোট ২ (দুই) জন দায়িত্বশীল।
ঘ. ‘কেন্দ্রীয় সালিশ বোর্ড’ প্রয়োজন মনে করলে অন্য কোনো এক বা একাধিক ব্যক্তিকে সেখানে যুক্ত করতে পারবেন।
৩. ক. যেকোনো কমিটির যেকোনো দায়িত্বশীল/সদস্যের বিরুদ্ধে গৃহীত কোনো সিদ্ধান্তে ন্যায়বিচারে ঘাটতি মনে হলে ভুক্তভোগী তার উর্ধ্বতন শাখার ‘সালিশ বোর্ড’-এ আপিল করতে পারবেন।
খ. ‘সালিশ বোর্ড’-কে এড়িয়ে কেউ অন্য কোনো মাধ্যমে রায় প্রভাবিত করার চেষ্টা করলে তিনি ধারা ৭:৬ লঙ্ঘনকারী হিসেবে গণ্য হবেন। এ কারণে তাকে সাংগঠনিক শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
গ. সর্বাবস্থায় ‘সালিশ বোর্ড’-এর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গৃহীত হবে।
৪. যদি কেউ হয়রানী করার উদ্দেশ্যে ‘সালিশ বোর্ড’-এ আপিল করে এবং সেটা প্রমাণিত হয় তবে তাকেও শরীয়াহ মোতাবেক সাংগঠনিক শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

ধারা-৩৮ শূন্যপদ পূরণ:
১. বামুকের মজলিসে খাছের কোনো পদ ইস্তফা, অব্যাহতি, মৃত্যু ইত্যাদি কারণে শূন্য হলে আমীরুল মুজাহিদীন মজলিসে খাছের সঙ্গে পরামর্শক্রমে তা পূরণ করবেন।
২. ক. বিভাগ থেকে নিয়ে ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা কমিটি পর্যন্ত যেকোনো শাখা কমিটির ছদর ও সাধারণ সম্পাদক ব্যতীত অন্য কোনো পদ উপরোক্ত কারণে শূন্য হলে, নিজ নিজ কমিটির ছদর ও সাধারণ সম্পাদক কমিটির অন্যান্য দায়িত্বশীল/সদস্যগণের সঙ্গে পরামর্শক্রমে শূন্যপদ পূরণের জন্য এক ধাপ উপরের কমিটির নিকট প্রস্তবনা পেশ করবেন। উর্ধ্বতন কমিটি যাচাই-বাছাই করে তার অনুমোদন দিবেন।
খ. মহল্লা কমিটির ইমাম বা প্রেসিডেন্ট ব্যতীত অন্য কোনো পদ উপরোক্ত কারণে শূন্য হলে ইমাম বা প্রেসিডেন্ট কমিটির অন্যান্য দায়িত্বশীল/সদস্যগণের সঙ্গে পরামর্শক্রমে শূন্যপদ পূরণের জন্য এক ধাপ উপরের কমিটির নিকট প্রস্তাবনা পেশ করবেন। উর্ধ্বতন কমিটি যাচাই-বাছাই করে তার অনুমোদন দিবেন।
৩. ছদর ও সাধারণ সম্পাদক এবং ইমাম ও প্রেসিডেন্টের বেলায় এক ধাপ উপরের কমিটির ছদর বা সাধারণ সম্পাদক সংশ্লিষ্ট কমিটির অন্যান্য দায়িত্বশীল/সদস্যগণের সাথে পরামর্শক্রমে পূরণ করবেন।
ধারা-৩৯ গঠনতন্ত্রের ব্যাখ্যা ও সংশোধন:
১. ব্যাখ্যা:
গঠনতন্ত্রের যেকোনো ধারা-উপধারার ব্যাখ্যায় মজলিসে খাছ কর্তৃক ব্যাখ্যাই চূড়ান্ত বলে গৃহীত হবে।
২. সংশোধন:
বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির মজলিসে আমের পরামর্শ এবং মজলিসে খাছের সিদ্ধান্ত মোতাবেক গঠনতন্ত্রের যেকোনো ধারা/উপধারার সংশোধন, সংযোজন, পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা যাবে।
ধারা-৪০ বিলোপ সাধন:
যদি কখনো বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি ‘বিলোপ সাধন’ একান্ত প্রয়োজন হয়ে পড়ে তাহলে কমপক্ষে ১৫ (পনের) দিনের নোটিশে এজেন্ডা উল্লেখপূর্বক মজলিসে খাছের নিয়মিত সভা/জরুরি সভা আয়োজন করতে হবে। উক্ত সভায় বিস্তারিত আলোচনাক্রমে উপস্থিত সদস্যগণের তিন চতুর্থাংশ সদস্য বিলোপ সাধনের পক্ষে মতামত পেশ করলে তা প্রাথমিক অনুমোদন বলে গণ্য হবে। পরবর্তীতে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অনুরূপভাবে ১৫ (পনের) দিনের নোটিশে মজলিসে আমের সভা আহ্বান করে বামুকের সেক্রেটারী জেনারেল সাহেব উক্ত সভায় মজলিসে খাছের সিদ্ধান্ত পাঠ করে শোনাবেন। অতঃপর উক্ত সিদ্ধান্তের উপর পর্যালোচনান্তে উপস্থিত সদস্যগণের তিন চতুর্থাংশ সদস্য মজলিসে খাছের সিদ্ধান্তের পক্ষে মত প্রকাশ করলে তা চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ মজলিসে খাছের পরামর্শ মোতাবেক বামুক কর্তৃক পরিচালিত চরমোনাই জামিয়া এবং যেকোনো দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যয় করা যাবে।

চিশতিয়া সাবেরিয়া তরীকার
সাজ্রানামা
চরমোনাই-এর মরহুম পীর হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ এছহাক রহ. বাংলা ১৩৮০ সালের ৩০ ভাদ্র মোতাবেক ১৪ সেপ্টেম্বর/১৯৭৩ সনে ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন। চরমোনাইতে তাঁর কবর আছে। পীর সাহেব হুযূর ইন্তেকালের পূর্বে কাউকে গদ্দিনসীন করে যাননি। তিনি কয়েকজনকে খেলাফত দিয়ে যান। এই তরীকায় পীরের ছেলে পীর হওয়া বা গদ্দিনসীন করার রেওয়াজ নেই। পীর সাহেব ইন্তেকালের পূর্বে একটি মজলিসে শূরা গঠন করে যান। হুযূরের ইন্তেকালের পরে তরীকা, চরমোনাই মাদ্রাসা এবং অন্যান্য বিষয়ে কোনো বিরোধ দেখা দিলে এই মজলিস মীমাংসা করে দিবেন। হুযূরের ইন্তেকালের পর চরমোনাই আহ্ছানাবাদ রশীদিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল জনাব আলহাজ হযরত মাওলানা জহুরুল হক রহ. উক্ত মজলিসে শূরার এক সভা ডাকেন। সভার আলোচ্য বিষয় ছিল তরীকতের কর্ণধার নির্ধারণ করা। ১৩৮০ সালের ১লা অগ্রহায়ণ উক্ত মজলিসে শূরার বিস্তারিত আলোচনায় প্রমাণিত হয় যে মরহুম পীর সাহেবের খলীফাগণের মধ্যে তার মেঝ সাহেবজাদা আলহাজ হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ ফজলুল করিম রহ. যোগ্যতম। কারণ, ইলমের দিক দিয়ে তিনি দাওরা হাদীস পাশ এবং চরমোনাই আহ্ছানাবাদ রশীদিয়া কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস। আমলের দিক দিয়েও তিনি সদা-সর্বদা মরহুম পীর সাহেবের অনুসারি ছিলেন। সর্বোপরি তরীকতের ভার আল্লাহর ইশারা ছাড়া হয় না।
নোয়াখালীর এক মুহাদ্দিস বলেছেন যে, তিনি সাহারানপুরে অধ্যয়নরত অবস্থায় গঙ্গুহ শরীফে হযরত মাওলানা রশীদ আহমদ গঙ্গুহী রহ. এর কবর জিয়ারত করতে যান। তাঁর এক নাতী মুহাদ্দিসকে বলেন, ‘মাওলানা! ইঁহা কিছ্লিয়ে আয়া? ইঁহা কুছ্ নেহি, কারী ইব্রাহীম নে সব উজানী লে গিয়া’ অর্থাৎ মাওলানা এখানে কেন এসেছেন, এখানে কিছুই নেই। ক্বারী ইব্রাহীম সব উজানী নিয়ে গেছেন।
উজানীর পীরানে পীর হযরত মাওলানা ক্বারী ইব্রাহীম রহ. বলতেন, “মিয়ারা, তোমাদেরকে বরিশাল যেতে হবে”। চরমোনাই-এর মরহুম পীর সাহেব বলতেন, তোমাদেরকে এই চরমোনাই আসতে হবে। তাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ইশারায় আলহাজ্ব হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ ফজলুল করিম রহ.-এর উপর তরীকতের ভার সর্বসম্মতিক্রমে ন্যস্ত হল। চরমোনাই-এর মাহফিলে এই কথা ঘোষণা দেয়ায় উপস্থিত লক্ষ লক্ষ মুরীদ ও মুজাহিদ মহা-আনন্দে বাইয়াত গ্রহণ করলেন। সেই থেকে চরমোনাই-এর পীর আলহাজ হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ ফজলুল করীম রহ. আল্লাহর বান্দাদেরকে হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নির্দেশিত পথে পরিচালনার জন্য বিরামহীনভাবে দীর্ঘ ৩৩ বছর প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। অতঃপর লক্ষ লক্ষ আল্লাহর পথভোলা বান্দাকে তরীকতে দাখিলের মাধ্যমে খাটি মুসলমান হওয়ার পথ দেখিয়ে বিগত ২৫/১১/২০০৬ ইং মোতাবেক ১১ই অগ্রহায়ণ/১৪১৩ বাংলা তারিখ রোজ শনিবার সকাল ৯.৪০ মিনিটের সময় ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
মরহুম হুযূরের ওসিয়তনামার নির্দেশ মোতাবেক একজন শায়েখে তরীকত তথা আমীরুল মুজাহিদীন মনোনয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির মজলিসে খাছের দায়িত্বশীল/সদস্য এবং হুযুরের খলীফাগণের সমন্বয়ে এক জরুরী পরামর্শ সভা ঐ দিনই (২৫/১১/২০০৬ ইং) রাত্র ১১ (এগার) ঘটিকার সময় কওমিয়া মাদরাসার (নতুন ভবনের ২য় তলায়) অস্থায়ী কার্যালয়ে বামুকের সম্মানিত নায়েবে আমীর আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ ইউছুফ আলী খান সাহেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিস্তারিত আলোচনার পর উপস্থিত সদস্যগণের ঐক্যমতে মরহুম পীর সাহেব হুযূর রহ. এর তৃতীয় সাহেবজাদা ও খলীফা আলহাজ হযরত মাওলানা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম সাহেবের উপর শায়েখে তরীকতের দায়িত্ব অর্পন করা হয়। পরের দিন অর্থাৎ ২৬/১১/২০০৬ ইং তারিখ রোজ রবিবার (১২ই অগ্রহায়ণ/১৪১৩ বাংলা চরমোনাই মাহফিলের প্রথম দিন) ফজর বাদ মরহুম হযরত পীর সাহেব হুযূর রহ.-এর শ্রদ্ধেয় বড় ভাই আলহাজ্ব হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ মোবারক করীম সাহেব কর্তৃক নব মনোনীত শায়েখে তরীকত তথা আমীরুল মুজাহিদীনের নাম চরমোনাই মাহফিলে ঘোষণা দিলে উপস্থিত লক্ষ লক্ষ মুরীদ ও মুজাহিদ মহা-আনন্দে বাইয়াত গ্রহণ করেন।
এই তরীকায় দুনিয়ার কোনো মকছুদ তথা ধন দৌলত, মামলা-মোকদ্দমা, ব্যারাম-পীড়া ইত্যাদির তদবির করা হয়না বরং মউতের পরে যে জীবন, সেই জীবনে কি করে সুখ-শান্তিতে থাকা যায় তারই ব্যবস্থা। প্রতি বছর ১২, ১৩, ১৪ অগ্রহায়ণ এবং ১২, ১৩, ১৪ ফাল্গুন চরমোনাইতে বার্ষিক মাহফিল হয়। উক্ত মাহফিলে লক্ষ লক্ষ মুরীদ-মুজাহিদ আশেকীন ও মুহিব্বীনগণ হাজির হয়ে আখেরাতের ছবক নেন। ঐ মাহফিলে কোনো নজর-নেওয়াজ, ভেট-বাগার ও খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা নেই। মুজাহিদগণ নিজেরা পাক করে অথবা হোটেলে খেয়ে মাহফিলে হাজির থাকেন।
বরকত ও ফায়েযের জন্য তরীকার শাজরানামা উল্লেখ করা হলো।
১। অসীলাতুনা ফিদ্দারাইন নাবীয়্যুনা মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
২। হযরত আলী রাযি.।
৩। হযরত হাসান বসরী রহ.।
৪। হযরত আব্দুল ওয়াহেদ রহ.।
৫। হযরত খাজা ফোজায়েল ইবনে আয়ায রহ.।
৬। হযরত আবুল কাশেম ইবরাহীম ইবনে আদহাম বলখী রহ.।
৭। হযরত হোযায়ফা মুরয়াশি রহ.।
৮। হযরত আমিনুদ্দীন আবু হোরায়রা বসরী রহ.।
৯। হযরত আবদুল বারী সিদ্দিকী রহ.।
১০। হযরত আবদুল হাদী সিদ্দিকী রহ.।
১১। হযরত সৈয়দ আজাদুদ্দীন রহ.।
১২। হযরত শাহ মুহাম্মাদ মক্কী রহ.।
১৩। হযরত সৈয়দ মুহাম্মাদী রহ.।
১৪। হযরত মুহিব্দুল্লাহ এলাহাবাদী রহ.।
১৫। হযরত শায়েখ আবু সাঈদ গঙ্গুহী রহ.।
১৬। হযরত শায়েখ নিজাম উদ্দীন বখী রহ.।
১৭। হযরত জালাল উদ্দিন থানিছারী রহ.।
১৮। হযরত কুতবুল আলম আব্দুল কুদ্দুছ গঙ্গুহী রহ.।
১৯। হযরত শায়েখ মুহাম্মাদ আরেফ রহ.।
২০। হযরত আব্দুল হক রুদোলভী রহ.।
২১। হযরত শায়েখ জালাল উদ্দীন পানিপথি রহ.।
২২। হযরত শামসউদ্দিন তুরক পানিপথি রহ.।
২৩। হযরত মাখদুম আলাউদ্দীন আলী আহমদ কালীয়ারী রহ.।
২৪। হযরত ফরীদ উদ্দীন মাস্উদী গঞ্জশকর রহ.।
২৫। হযরত কুতুব উদ্দীন বখতিয়ার কাকি রহ.।
২৬। হযরত খাজা মাঈন উদ্দীন হাসান ছাঞ্জারী চিশতী রহ.।
২৭। হযরত ওসমান হারূনী রহ.।
২৮। হযরত শরীফ জেনদানী রহ.।
২৯। হযরত কুতুব উদ্দীন মৌদুদ চিশতী রহ.।
৩০। হযরত আবু ইউসুফ চিশতী রহ.।
৩১। হযরত আবু মুহাম্মাদ মুহ্তারম চিশতী রহ.।
৩২। হযরত খাজা আহমদ রহ.।
৩৩। হযরত আবু মুহাম্মাদ আবদাল চিশতী রহ.।
৩৪। হযরত আবু ইসহাক শামি রহ.।
৩৫। হযরত মমশাদ উলুদীনূরী রহ.।
৩৬। হযরত সৈয়দ আবদুর রহীম ফাতেমী শহীদ বেলায়েতী রহ.।
৩৭। হযরত নূর মুহাম্মাদ উলুভী ঝান্ঝানভী রহ.।
৩৮। হযরত মাওলানা হাজী এমদাদুল্লাহ শাহে ফারূকী মুহাজিরে মক্কী রহ.।
৩৯। হযরত মাওলানা রশীদ আহমদ গঙ্গুহী রহ.।
৪০। হযরত মাওলানা ক্বারী ইবরাহীম উজানী রহ.।
৪১। হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ এছহাক রহ.।
৪২। হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ ফজলুল করীম রহ.।
৪৩। হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (হাফিজাহুল্লাহু)।

 

মুজাহিদগণের প্রতি নির্দেশ
১। মরহুম দাদাজানের ‘জেহাদে ইসলাম’ কিতাবে লিখিত মুজাহিদগণের কর্তব্য, কমান্ডারদের কর্তব্য, ইমাম সাহেবের কর্তব্য, সেক্রেটারীর কর্তব্য মনযোগের সঙ্গে পাঠ করে সে মোতাবেক আমল করবেন।
২। হালকার দিন বাদ আছর কমান্ডারগণ চুঙ্গা ফুঁকিয়ে এলাকায় দাওয়াত দিবেন।
৩। যে সকল মসজিদে নির্ধারিত সময়ে আযান ও নামায হয়, সেখানে হালকার ইমাম সাহেব ১৫ থেকে ২০ মিনিট এবং যে সকল মসজিদে নির্ধারিত সময়ে আযান ও নামায হয় না, সেখানে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট যিকিরের তালীম দিয়ে যিকির আরম্ভ করবেন। কোনো অবস্থাতেই উপরে উল্লিখিত সময়ের অতিরিক্ত সময় কেউ বয়ান করবেন না। তারপর সুব্হানাল্লাহ্ ১০০ বার, আল্হাম্দুলিল্লাহ্ ১০০ বার, আল্লাহু আক্বার ১০০ বার আদায় করে পুরাপুরি দ্বিতীয় সবক আদায় করবেন। সংক্ষিপ্ত মুনাজাতের পর উপস্থিত জাকেরীনগণকে সূরা-কেরাত মশক ও মাসয়ালা-মাসায়েল শিক্ষা দিবেন।
৪। সেক্রেটারী নিয়মিত মুজাহিদগণের হাজিরা নিবেন এবং হাজিরা খাতায় যেভাবে দেখানো আছে ঠিক সেভাবে মুজাহিদগণের পরীক্ষা নিবেন।
৫। প্রত্যেক মুজাহিদকেই আমীরের হুকুম ও কমিটির সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে।
৬। বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির গঠনতন্ত্র মোতাবেক প্রত্যেক মুজাহিদই সাংগঠনিক কাজ করবেন। ওয়ার্ড/ইউনিয়ন থেকে নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি পর্যন্ত নিজ নিজ কমিটির দায়িত্বশীলগণের উপদেশ মোতাবেক চলবেন। উর্ধ্বতন কমিটির নির্দেশ মেনে চলবেন।
৭। প্রত্যেক মুজাহিদ তরীকার উন্নতিকল্পে এবং সাংগঠনিক কাজের তরক্কীর জন্য নিজ নিজ কমিটিতে গঠনতন্ত্রে বর্ণিত হারে নিয়মিত মাসিক দান পরিশোধ করবেন। প্রত্যেক অধঃস্তন কমিটি নির্ধারিত হারে উর্ধ্বতন কমিটিতে মাসিক দান প্রদান করবেন।
৮। প্রত্যেক মুজাহিদ অবশ্যই ফজর ও মাগরিব বাদ নিয়মিতভাবে খেয়ালের সাথে সবক আদায় করবেন। মরহুম দাদাজানের লিখিত ২৭ খানা কিতাবসহ অন্যান্য বুযুর্গাণেদ্বীনের ও মুজাহিদ প্রকাশনীর কিতাবাদি পাঠ করবেন। সাপ্তাহিক তা’লীম ও হালকায়ে যিকির, মাসিক ইজতিমা ও শবগুজারী এবং চরমোনাই-এর দুইটি মাহফিলে প্রথম থেকে আখেরী মুনাজাত পর্যন্ত হাজির থাকবেন।

সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
পীর সাহেব চরমোনাই, বরিশাল।

তিন শর্ত : হযরত পীর সাহেব হুযূর চরমোনাই রহ. ঘোষিত দ্বীন বিজয়ের পূর্বশর্ত
হযরত পীর সাহেব হুযূর চরমোনাই রহ. ঘোষণা করেছেন, দ্বীনের বিজয়ের জন্য কাজ করতে হলে প্রথমত তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে। ওই শর্তগুলো পূরণ না করে দ্বীনের বিজয়ের জন্য কাজ করলে সেক্ষেত্রে ব্যর্থতা ছাড়া সফলতা আসবে না। শর্ত তিনটি হলো-
১. প্রথম শর্ত : নিয়তে খুলুছ (বিশুদ্ধ নিয়ত)।
২. দ্বিতীয় শর্ত : হিম্মতে খুলুছ।
৩. তৃতীয় শর্ত : তারবিয়াতে খুলুছ।

তিন সবক : দ্বীন বিজয়ে হযরত পীর সাহেব চরমোনাই রহ. এর যুগান্তকারী কর্মসূচি
জীবনের প্রতিটি অঙ্গনে দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য হযরত পীর সাহেব চরমোনাই রহ.-এর এক যুগান্তকারী কর্মসূচি হলো ‘তিন সবক’। তিন শর্ত পূরণের পাশাপাশি পীর সাহেব চরমোনাই রহ. ঘোষিত ‘তিন সবক’ যথাযথভাবে পালন করতে পারলে ব্যক্তিজীবন থেকে নিয়ে রাষ্ট্রীয়জীবন পর্যন্ত সর্বত্রই দ্বীনের বিজয় অর্জিত হবে ইনশাআল্লাহ। উক্ত তিন সবক হলো-
১. দাওয়াতের মাধ্যমে মাসে ৪ জনকে (সপ্তাহে ১ জন) সদস্য ফরম পূরণের মাধ্যমে দ্বীনের পথে নিয়ে আসা।
২. মাসে কমপক্ষে একদিনের আয় দ্বীনি সংগঠনসহ অন্যান্য দ্বীনি কাজে ব্যয় করা। (আয় না থাকলে মোট মাসিক ব্যয়ের একদিনের ব্যয় প্রদান করা)।
৩. দ্বীন বিজয়ে, যোগ্যতা অর্জনে ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য দৈনিক দুই রাকাত সালাতুল হাজত নামাজ আদায় এবং আল্লাহর দরবারে রোনাজারী করা।

একনজরে বামুক

  • প্রতিষ্ঠাতা : মাওলানা সৈয়দ এসহাক রহ.
  • বর্তমান আমীর : মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম
  • সেক্রেটারি জেনারেল : খন্দকার গোলাম মাওলা
  • প্রতিষ্ঠার তারিখ : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮২
  • কার্যকরী সদর দপ্তর : ৩৭/১ (৬ষ্ঠ তলা, ফারজানা টাওয়ার), নর্থব্রুক হল রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০

মুজাহিদ আবেদন ফরম

চরমোনাই তরিকার মুজাহিদ হওয়ার জন্য নিম্নোক্ত ফরমের মাধ্যমে আবেদন করুন

বই অর্ডার ফরম

মুজাহিদ নিবন্ধন ফরম

চরমোনাই তরিকার মুজাহিদগণের আবেদনের প্রেক্ষিতে নিম্নোক্ত ফরমের মাধ্যমে নিবন্ধন করুন

হালকায়ে যিকির কমিটির রেজিস্ট্রেশন ফরম

চরমোনাই তরিকার হালকায়ে যিকির কমিটি নিম্নোক্ত ফরমের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করুন