উপজিলা/থানা শাখা মুজাহিদ কমিটি গঠন প্রণালী
বিভাগ থেকে নিয়ে ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা পর্যন্ত শাখা কমিটিসমূহ ৩৫ (পঁয়ত্রিশ) সদস্য বিশিষ্ট হবে এবং তা নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে গঠিত হবে-
১. ছদর ১ জন
২. ছদর নায়েবে ছদর ২ জন
৩. সাধারণ সম্পাদক ১ জন
৪. যুগ্ম সম্পাদক ১ জন
৫. ইমাম-কাম-অডিটর ১ জন
৬. সহকারী ইমাম-কাম-অডিটর ১ জন
৭. সাংগঠনিক সম্পাদক ১ জন
৮. সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক ১ জন
৯. প্রচার সম্পাদক ১ জন
১০. সহকারী প্রচার সম্পাদক ১ জন
১১. দপ্তর সম্পাদক ১ জন
১২. সহকারী দপ্তর সম্পাদক ১ জন
১৩. কোষাধ্যক্ষ ১ জন
১৪. কমান্ডার ২ জন
১৫. সদস্য ১৯ জন
মোট ৩৫ জন
যে সকল সাংগঠনিক এলাকায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক মুজাহিদ পাওয়া যাবে না, সেখানে স্বল্প সংখ্যক মুজাহিদগণের সমন্বয়ে সাময়িকভাবে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা যাবে।
কমিটি গঠন পদ্ধতি
ক. আমীরুল মুজাহিদীন অথবা সেক্রেটারী জেনারেল সদ্য বিলুপ্ত বিভাগীয় শাখা মুজাহিদ কমিটির ৩৫ জন দায়িত্বশীল ও সদস্য এবং বিভাগের আওতাধীন জিলা কমিটিসমূহের ৪ জন করে দায়িত্বশীল যথা- ছদর, সাধারণ সম্পাদক, ইমাম-কাম-অডিটর ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাহেবগণের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বিভাগীয় কমিটির ছদর ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৬ জন দায়িত্বশীল মনোনীত করবেন।
খ. মনোনীত দায়িত্বশীলগণ সভা ডেকে পরামর্শ করে বাকী ১৯ জন সদস্য মনোনীত করবেন।
লক্ষণীয়
ক. যদি কোনো ব্যক্তির কাজে-কর্মে, কথাবার্তায় বা ইশারা-ইঙ্গিতে দায়িত্ব পেতে ইচ্ছুক এমন মনোভাব প্রকাশ পায় তবে কোনোভাবেই ঐ ব্যক্তিকে কমিটির দায়িত্বশীল মনোনীত করা যাবে না।
খ. শাখা কমিটিসমূহের দায়িত্বশীল মনোনয়নের ব্যাপারে কোনো প্রকার পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না। পক্ষপাতিত্ব করলে তাকে অবশ্যই আল্লাহ তা‘আলার কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
দায়িত্বশীল ও সদস্যগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য
বিভাগ থেকে নিয়ে ইউনিয়ন/সিটি ওয়ার্ড ও পৌরসভা কমিটি পর্যন্ত শাখা সংগঠনসমূহের দায়িত্বশীল ও সদস্যগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য-
১. ছদর
ক. তিনি কমিটির সকল সভায় সভাপতিত্ব করবেন।
খ. তিনি সভায় গৃহিত সিদ্ধান্তসমূহ যথারীতি বাস্তবায়নের জন্য সাধারণ সম্পাদককে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিবেন।
২. নায়েবে ছদর
ক. তিনি জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে ছদর সাহেবের অনুপস্থিতিতে যেকোনো সভায় সভাপতিত্ব করবেন।
খ. তিনি ছদর সাহেবকে কমিটির সকল কাজে সার্বিক সহযোগিতা করবেন।
৩. সাধারণ সম্পাদক
ক. তিনি কমিটির ছদর সাহেবের পরামর্শক্রমে কমিটির সভা আহ্বান করবেন।
খ. তিনি সভায় গৃহিত সিদ্ধান্তসমূহ রেজুলেশন বইতে লিপিবদ্ধ করে যথাসময়ে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
গ. তিনি কমিটির সার্বিক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে সময়োচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
৪. যুগ্ম সম্পাদক : তিনি সর্বাবস্থায় সাধারণ সম্পাদককে সকল কাজে সহযোগিতা করবেন এবং সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে তাঁর সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন।
৫. ইমাম-কাম-অডিটর
ক. তিনি ছদর ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে পরামর্শক্রমে কমিটির মাসিক ইজতিমা ও শবগুজারী পরিচালনা করবেন। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদির ব্যবস্থা করবেন। নিকটতম অধঃস্তন কমিটির মাসিক ইজতিমা ও শবগুজারীতে উপস্থিত থাকবেন।
খ. তিনি মাসিক ইজতিমা ও শবগুজারী বামুকের নীতিমালা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হয় কি-না তা তদারকি করবেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে লিখিত প্রতিবেদন তাঁর নিজস্ব কমিটির সাধারণ সম্পাদকের নিকট নিয়মিতভাবে দাখিল করবেন।
গ. তিনি স্থানীয়ভাবে তা’লীম ও হালকায়ে যিকির কমিটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে ইমাম-প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবেন। নিকটতম অধঃস্তন কমিটির মাসিক প্রতিবেদন ফরম নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংগ্রহ করে তাঁর নিজস্ব কমিটির সাধারণ সম্পাদকের নিকট জমা দিবেন।
ঘ. তিনি স্থানীয়ভাবে গঠনকৃত তা’লীম ও হালকায়ে যিকির কমিটিগুলো সাংগঠনিক নিয়মে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে রেজিট্রেশন করানোর ব্যবস্থা করবেন।
৬. সহকারী ইমাম-কাম-অডিটর
ক. তিনি সর্বাবস্থায় ইমাম-কাম-অডিটরকে সকল কাজে সহযোগিতা করবেন এবং ইমাম-কাম-অডিটরের অনুপস্থিতিতে তাঁর সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন।
খ. তিনি ছদর/সাধারণ সম্পাদকের পরামর্শক্রমে ইমাম-কাম-অডিটরের প্রণীত সফরসূচি অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন।
৭. সাংগঠনিক সম্পাদক : তিনি সংগঠনের সম্প্রসারণ ও সাংগঠনিক কার্যক্রমের ক্রমোন্নতির লক্ষ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন এবং সেগুলো বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এই ব্যাপারে তিনি অবশ্যই কমিটির সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে পরামর্শ করে কার্য সম্পাদন করবেন।
৮. সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক : তিনি সংগঠনের সাংগঠনিক সকল কাজে সাংগঠনিক সম্পাদককে সব ধরণের সহযোগিতা করবেন।
৯. প্রচার সম্পাদক : তিনি সংগঠনের সভা, সমাবেশ, আদর্শ, লক্ষ্য ইত্যাদি বাস্তবায়নে সব ধরণের প্রচারের দায়িত্ব পালন করবেন।
১০. সহকারী প্রচার সম্পাদক : তিনি সর্বাবস্থায় প্রচার সম্পাদকের সকল কাজে সহযোগিতা করবেন।
১১. দপ্তর সম্পাদক : তিনি সংগঠনের দাপ্তরিক রেকর্ড, কাগজপত্র রক্ষণাবেক্ষণের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। সব ধরণের যোগাযোগ রক্ষা করবেন।
১২. সহকারী দপ্তর সম্পাদক : তিনি সর্বাবস্থায় সংগঠনের দাপ্তরিক সকল কাজে দপ্তর সম্পাদককে সহযোগিতা করবেন।
১৩. কোষাধ্যক্ষ : তিনি সংগঠনের সকল আয়-ব্যয়ের হিসাব পরিপালন করবেন এবং অনুমোদিত বিল/ ভাউচার মোতাবেক টাকা প্রদান করবেন।
১৪. কমান্ডার ১ ও ২
ক. তাঁরা আল্লাহর বান্দাগণকে আল্লাহর পথে ডাকবেন।
খ. তাঁরা সংগঠনের ওয়াজ মাহফিল ও সমাবেশে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
গ. তাঁরা সংগঠনের সব ধরণের চিঠি-পত্র আদান-প্রদান করবেন।
ঘ. তাঁরা কমিটির ছদর/সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে পরামর্শক্রমে স্থানীয়ভাবে স্বেচ্ছাসেবক টিমের সকল দায়িত্ব পালন করবেন।
১৫. সদস্য
ক. সদস্যগণ কমিটির সার্বিক উন্নয়ন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার পরামর্শ দিবেন।
খ. তাঁরা সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব পালন করবেন।
১৬. গ্রাম/মহল্লা কমিটির দায়িত্বশীল ও সদস্য : গ্রাম/মহল্লা কমিটির দায়িত্বশীল ও সদস্যগণ ‘জেহাদে ইসলাম’ কিতাবের আলোকে দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পাদন করবেন।
কমিটিসমূহের দায়িত্বশীল ও সদস্যগণের যোগ্যতা ও গুনাবলী
ক. বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির শাখা কমিটিসমূহের প্রত্যেক দায়িত্বশীল ও সদস্যগণের অবশ্যই নিম্নবর্ণিত যোগ্যতা ও গুণাবলী থাকতে হবে-
১. সদস্য ফরম পূরণ পূর্বক মুজাহিদ কমিটির সদস্য হতে হবে।
২. আল্লাহভীরু ও দ্বীনদার মুমিন হতে হবে।
৩. ছহীহ শুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াতে সক্ষম হতে হবে।
৪. পাঁচ ঔষধ, তিন ছবক ও তিন শর্ত পালনকারী হতে হবে।
৫. মোয়ামালাত ও মোয়াশারাত ঠিক হতে হবে।
৬. শরীয়ত বিরোধী কোনো কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারবে না।
৭. মাসিক দান পরিশোধে নিয়মিত হতে হবে।
৮. উপরস্থ কমিটির নির্দেশিত সকল কর্মসূচি যথাযথভাবে বাস্তবায়নে সক্রিয় হতে হবে।
৯. উপরস্থ কমিটির দায়িত্বশীলগণের সফরকালীন সময়ে স্থানীয় সকল প্রকার সাংগঠনিক ও তারবিয়াতী বৈঠকে উপস্থিত থাকতে হবে।
১০. দ্বীনি সংগঠনসহ দ্বীন কায়েম সংগঠনের সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে হবে।
১১. মজলিসে আমের বৈঠকে যথাসময়ে উপস্থিতিসহ আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত থাকতে হবে।
১২. রমযানে চরমোনাইতে তা’লীম-তারবিয়াতে যোগদান ও নির্ধারিত সময় পর্যন্ত তা’লীম-তারবিয়াতে অংশগ্রহণ করতে হবে।
১৩. একই ব্যক্তি একাধিক দায়িত্বে থাকতে পারবে না। বিশেষ ক্ষেত্রে উক্ত শর্ত শিথিল করা যেতে পারে।
১৪. একই ব্যক্তি পর পর একই দায়িত্বে দুই টার্মের বেশি থাকতে পারবে না। তবে সংগঠনের কাজের স্বার্থে কোথাও কোথাও বিশেষ প্রয়োজনে আলোচ্য শর্ত শিথিল করা যেতে পারে।
১৫. রাষ্ট্রবিরোধী বা রাষ্ট্রীয় শৃংখলা পরিপন্থী কোনো প্রকার ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকতে পারবে না।
১৬. গঠনতন্ত্রে বর্ণিত স্ব স্ব দায়িত্ব পালনে অনুগত থাকতে হবে।
১৭. দ্বীন কায়েম সংগঠনের অবশ্যই কর্মী হতে হবে।
১৮. একই সময়ে একই ব্যক্তি দ্বীনি সংগঠন ও দ্বীন কায়েম সংগঠনের দায়িত্বশীল হতে পারবে না। তবে সদস্য হিসেবে থাকতে পারবেন।
খ. মুজাহিদ কমিটির কোনো শাখার দায়িত্বশীল মনোনয়নের বেলায় উপযুক্ত ব্যক্তির সংকট দেখা দিলে এবং দ্বীন কায়েম সংগঠন বা কোনো সহযোগী সংগঠনের কাউকে উক্ত পদের জন্য অধিকতর উপযুক্ত মনে হলে, সেক্ষেত্রে বৃহত্তর স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সভাপতি ও সেক্রেটারীর সাথে আলোাচনা করে তাদের সম্মতিক্রমে তাঁকে মনোনয়ন দেয়া যাবে। তবে পূর্বের সংগঠনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি তথা ছাড়পত্র নিতে হবে।