আখেরী মুনাজাতে আমরা হাত উঠাইলাম, আল্লাহ তিন দিন সাড়ে তিন দিন পর্যন্ত যত নেকী হয়েছে, দোয়া-দরূদ, তাসবিহ-তাহলিল, জিকির-আজকার আমরা যা করেছি, এর মধ্যে যাহা ভুল হইয়াছে তা আপনি মেহেরবানী করে মাফ করে দেন। আল্লাহ! এতে যা সাওয়াব হয়েছে তামাম আম্বিয়ায়ে কেরাম খাছ করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রওজা পাকে পৌঁছাইয়া দেন। তামাম আজওয়াজে মোতাহহারাত, তামাম আওলাদে আসহাব, সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন, তাবে তাবেঈন, আইম্মায়ে মোজতাহেদীন, ওলামায়ে মোতাকাদ্দেমীন, মোতাআখ্খেরীন, মাশায়েখে তরীকত, আউলিয়ায়ে কেরাম সবার রূহ পাকের ওপর উহার সাওয়াব পৌঁছাইয়া দিন। আল্লাহ্, সমস্ত মোমেন, মোমেনাত; খাছ করে আমাদের বাপ-মা, দাদা-দাদী, নানা-নানী, ভাই-বোন, স্ত্রী, পুত্র, আত্মীয়-স্বজন যার যে কবরে শুইয়া আছে সবার কবরে এর সাওয়াব পৌঁছাইয়া দিন। মাবুদগো! তোমার মুর্দা, যিন্দা সমস্ত প্রিয় বান্দা-বান্দীর বরকতে আমাদেরকেও মাফ করে দাও। ও আল্লাহ! মাবুদগো! তুমি যদি আমাদেরকে মাফ না করে জাহান্নামে দাও, তোমার তো কোন লাভ হবে না। যদি মেহেরবানী করে মাফ করে দাও, তোমার তো কোন ক্ষতিও হবে না। আল্লাহ! আপনি মেহেরবানী করে মাফ করে দিন। আল্লাহ! আমাদের আর কিছুই নাই, মাফ পাওয়ার মত কিছুই নাই, তবে একটা বড় আশা-ভরসা, আমরা তোমার হাবিবের এতিম উম্মত, তোমার হাবিবের তোফায়েলে তুমি আমাদেরকে মাফ করে দাও। আল্লাহ যত দিন যেন্দা রাখেন ইসলামের ওপর যেন্দা রাখেন। আল্লাহ যখন মউত দিবেন তখন ঈমানের সাথে মউত দিয়েন। ইয়া আল্লাহ! ইয়া আল্লাহ! ইয়া আল্লাহ! যারা দোয়া চাইছে দুনিয়াতে নাই, দোয়া চাইছে দুনিয়াতে আছে, আপনি জানেন কে কোন নিয়তে দোয়া চাইছে? আল্লাহ আপনি সবার দোয়া কবুল করে নেন। ইয়া আল্লাহ-
আল্লাহ আপনি নেককারদের সাথে আমাদেরকেও কবুল করে নেন। আমাদের সবাইকে কবুল করে নেন। মাওলা! ভিক্ষুক এক দুয়ারে যদি কিছু না পায় আর এক দুয়ারে যাইয়া কিছু না কিছু পায়। আমরা তোমার দুয়ারে হাত বাড়াইছি। তুমি যদি খালি হাতে ফিরাইয়া দাও, আর তো দুয়ার নাইরে মাওলা, আর তো মাওলা নাই। আল্লাহ তুমি যে কাজে যে কথায় যে খেয়ালে রাজি খুশি ঐ কাজ ঐ নিয়ত ঐ আমল করার তাওফিক আমাদেরকে দান কর। আল্লাহ! হক আমাদের কাছে হক বলে প্রকাশ করে দাও। আল্লাহ! হকের ওপর চলার তাওফিক দিয়া দাও। আল্লাহ! না হক আমাদের কাছে না হক বলে প্রকাশ করে দাও। না হক থেকে বাঁচিয়া থাকার তাওফিক দান কর। সারা দুনিয়ার মুসলমান বড় অশান্তিতে আছে, আল্লাহ! সারা দুনিয়ার মুসলমান খাছ করে বাংলাদেশের মুসলমানকে শান্তিতে রাখেন। সমস্ত মানুষকে আপনি শান্তিতে রাখেন। ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাদের হেদায়াত নসিব করেন। আমাদের আত্মীয়-স্বজন, স্ত্রী-পুত্র সবাইকে হেদায়াত নসিব করেন। সারা দেশবাসীকে আপনি হেদায়াত নসিব করেন। সারা দুনিয়াবাসীকে আপনি হোদায়াত নসিব করেন। ইয়া আল্লাহ! সমস্ত বালা মুসিবত থেকে আপনি হেফাজতে রাখেন। জালেমের জুলুম থেকে হেফাজতে রাখেন, শত্রুর শত্রুতা থেকে হেফাজতে রাখেন, হিংসুকের হিংসা থেকে হেফাজতে রাখেন, যাদুকরের যাদু থেকে হেফাজতে রাখেন।
ইয়া আল্লাহ! সমস্ত আসমানী যমীনী বালা থেকে হেফাজতে রাখেন। আল্লাহ, এই মাহফিল এত সুন্দরভাবে হওয়ার তাওফিক দিলেন এর শোকরিয়া করার শক্তি আমাদের নাই। আল্লাহ, ইয়া আল্লাহ! তোমার তারিফ করার ক্ষমতা আমাদের নাই, শুধু আলহামদুলিল্লাহ। নবীর তারিফ করার কোন ক্ষমতা আমাদের নাই শুধু দরুদ পাঠ করলাম আল্লাহ। আল্লাহ, যারা মেয়ে নিয়া বিপদে আছে বিবাহ হয় নাই, তাদের বিবাহ হওয়ার বন্দোবস্ত করে দেন, যাদের ছেলে নিয়া বিপদে আছে বিবাহ হয় না, তাদের ছেলেদের বিবাহের বন্দোবস্ত করে দেন। আল্লাহ, ইয়া আল্লাহ! ইয়া আল্লাহ! যে সকল মেয়ে লোক স্বামী নিয়া বিপদে আছে, তাদের স্বামীদেরকে হেদায়াত করে দেন। আল্লাহ! যে সমস্ত পুরুষেরা বিবি নিয়া মুসিবতে আছেন, আল্লাহ তাদের বিবিদেরকে হেদায়াত করে দেন। যারা ব্যারাম পীড়ায় ভোগতেছে তাদের ব্যারাম পীড়া থেকে শেফা দিয়া দেন। আল্লাহ ব্যারাম পীড়া থেকে শেফা দিয়া দেন, আল্লাহ ব্যারাম পীড়া থেকে শেফা দেন।
আল্লাহ! যারা যেইভাবে দীনের খেদমত করতেছে, সবাইকে সহিহভাবে দীনের খেদমত করার তাওফিক দান করেন। আল্লাহ! সবাইকে দীনের খেদমত করার তাওফিক দান করেন। আল্লাহ! সমস্ত মাদরাসাগুলো- যেখান থেকে দীনের সহিহ খেদমত হয় সে সমস্ত মাদরাসাগুলো কবুল করে নেন। আল্লাহ যারা পীরক্ষা দিবে দোয়া চাইছে, আপনি তাদের পরীক্ষায় কামিয়াব করেন। আল্লাহ! যারা যেভাবে দোয়া চাইছে বা চাইতে পারে নাই, আপনি জানেন, তাদের দেলের নেক মাকসুদগুলো পুরা করে দেন। হে আল্লাহ, রাস্তা-ঘাটে, ক্ষেতে-খামারে, লঞ্চে, স্টিমারে, গাড়িতে সব জায়গায় আল্লাহ আপনি আমাদেরকে হেফাজত করেন। আল্লাহ! যে যেই রোগে ভোগতেছি প্রত্যেকের রোগ থেকে শেফা দান করুন। আল্লাহ! যেই কথা যেই কাজে যেই চিন্তায় আপনি রাজি খুশি থাকেন ঐ কথা বলার তাওফিক দিন, ঐ কাজ করার তাওফিক দিন, ঐ চিন্তা করার তাওফিক দিন। যেই কথা যেই কাজে যেই চিন্তায় আপনি বেজার ঐ কথা বলা থেকে আমাদের বিরত রাখেন, ঐ কাজ করা থেকে আমাদের বিরত রাখেন, ঐ চিন্তা থেকে আপনি আমাদের বিরত রাখেন
আল্লাহ! আপনি আমাদের যেহেন শক্তি বাড়াইয়া দিন। কুরআন-হাদিস সহিহভাবে বোঝার এবং তার ওপর সহিহভাবে আমল করার তাওফিক দান করেন। আল্লাহ! তামাম যেন্দা মুর্দা সমস্ত আওলিয়ায়ে কেরামের রূহানী ফয়েজ আমাদের নসিব করেন। আল্লাহ, দীন দুনিয়াতে আপনি আমাদের বরকত দান করেন। ও আল্লাহ! আমাদের দীন দুনিয়া, জাহের, বাতেন, আওলাদ-ফরযন্দ, মাল-দৌলত, মাদরাসা, তরিকা, মাহফিল, ইসলামী হুকুমত, কুরআন শিক্ষা বোর্ড সব আপনার হাতে সোপর্দ করলাম। আপনি মেহেরবানী করে কবুল করে নেন। আল্লাহ আপনার হাতে সব সোপর্দ করলাম।
আল্লাহ! কত কথা আছে বলতে পারলাম না। মাবুদগো! তবে আপনার হাবিব যা ভাল জিনিস আপনার কাছে চাইছেন আমরাও সেই সমস্ত ভাল জিনিস আপনার কাছে চাইলাম। আপনি মেহেরবানী করে আমাদেরকে দান করেন। আল্লাহ! আপনার হাবিব যে সমস্ত খারাপ জিনিস থেকে পানাহ চাইছেন, ঐ সমস্ত খারাপ জিনিস থেকে আমরাও আপনার কাছে পানাহ চাই, আপনি আমাদেরকে খারাপ জিনিস থেকে পানাহ দেন। ইয়া আল্লাহ! ইয়া আল্লাহ! ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে মাফ করেন, আমাদের বাপ-মা, দাদা-দাদী, নানা-নানী, ভাই-বন্ধু, স্ত্রী-পুত্র, পরিজন, ওস্তাদ-শাগরেদ যে যার কবরে শুইয়া আছে সকলকে আপনি মাফ করে দেন। সুবহানা রাব্বিকা রাব্বিল ইজ্জাতি আম্মা ইয়াসিফুন। ওয়া সালামুন আলাল মুরসালিন। ওয়ালহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন।